আগস্ট মাসে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে তারল্য বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে মার্কিন ডলারের দুর্বলতার কারণে টাকার মান কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিনির্ধারিত হস্তক্ষেপের ফলে বিনিময় হার স্থিতিশীলই ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই মাসের শেষে যেখানে প্রতি মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২২ দশমিক ৩০ টাকা, সেখানে ১০ আগস্টে তা কমে দাঁড়ায় ১২১ দশমিক ৪০ টাকায়। আগস্ট মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে নিলামের মাধ্যমে মোট ৪৫ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার ক্রয় করেছে। এ হস্তক্ষেপের ফলে অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির চাপ কিছুটা প্রশমিত হয়। মাস শেষে আন্তব্যাংক বাজারে ডলারের বিনিময় হার দাঁড়ায় প্রতি ডলারে ১২১ দশমিক ৬৯ টাকা। দেশে আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন মূলত অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকগুলোর মধ্যে লেনদেনের মাধ্যমে হয়, তবে ফরোয়ার্ড ট্রেড এখনো খুবই সীমিত পরিসরে পরিচালিত হচ্ছে। আগস্টে বাজারে লেনদেন কার্যক্রম কিছুটা মন্থর হয়ে পড়ে। প্রতিদিন গড় স্পট লেনদেন কমে দাঁড়ায় ৩ কোটি ৩২ লাখ ডলার, যা জুলাই মাসে ছিল ৪ কোটি ৭ লাখ ডলার। একই সময়ে মোট আন্তব্যাংক লেনদেনে স্পট ট্রেড ৩২ দশমিক ১৪ শতাংশ থেকে কমে ৩০ দশমিক ২২ শতাংশে নেমে আসে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৫ সালের জুন থেকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহ শক্তিশালী হওয়া এবং আমদানি প্রবৃদ্ধি মন্থর থাকার কারণে ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে। এর ফলে টাকার মান বৃদ্ধির চাপ তৈরি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে তারল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং টাকার মান বৃদ্ধির প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক আগস্ট মাসে নিলামের মাধ্যমে মোট ৪৫ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার ক্রয় করেছে।
অন্যদিকে বিপিএম-৬ অনুযায়ী আগস্ট মাসের শেষে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬১৮ কোটি ডলার, যা জুলাই মাসে ছিল ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, রিজার্ভ বৃদ্ধির এই প্রবণতা মূলত বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রয় কার্যক্রম এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন (আকু) পরিশোধের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া আমানত বৃদ্ধির ফলাফল।