নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের সাত ভাইয়াপাড়া গ্রামে যৌতুক না পেয়ে স্মৃতি রানী বর্মণ (২৫) গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। শুক্রবার দুপুরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার পর অভিযুক্ত স্বামী ও বাড়ির লোকজন সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গৃহবধুর লাশ রেখে পালিয় যায়। নিহত স্মৃতি রানী কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার উত্তর দূর্গাপুর এলাকার যতীশ চন্দ্র বর্মণের মেয়ে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই শ্যামু চন্দ্র বর্মণ বাদি হয়ে শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে ৪ জনকে আসামী করে সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়ের করেন। লাশ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, ২০১৭ সালে সাতভাইয়া পাড়া গ্রামের বেনু চন্দ্র বর্মণের ছেলে সনজিৎ চন্দ্র বর্মণের সাথে কুমিল্লার সদর থানার আদর্শ উত্তর দূর্গাপুর গ্রামের যতীন্দ্র চন্দ্র বর্মণের মেয়ে স্মৃতির বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে পায়েল রানী বর্মণ নামের ৭ বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই স্মৃতি রানীর স্বামী সনজিৎ চন্দ্র বর্মণ, শ্বশুর বেনু চন্দ্র বর্মণ, শাশুড়ি জোসনা রানী বর্মণ, খালাতো বোন স্বরসতি চন্দ্র বর্মণ মিলে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো।
দাবিকৃত যৌতুকের টাকা থেকে তিন লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি দুই লাখ টাকার জন্য স্মৃতির উপর নির্যাতন অব্যাহত রাখে। গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে স্মৃতি রানীর ভাই শ্যামুকে ফোনে যৌতুকের বাকি দুই লাখ টাকা দ্রুত পরিশোধের জন্য চাপ দেয় স্বামী সনজিৎ। দুই লাখ টাকা পরিশোধ নরা করলে স্মৃতিকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। পরদিন শুক্রবার সকালে স্বামী সনজিৎ ফোনে পুনরায় দুই লাখ টাকা দাবি করে এবং সংসার না করার হুমকি দেয়। তারপর দুপুরে তারা খবর পান স্মৃতি রানী সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। পরিবারের সদস্যরা দ্রুত হাসপাতালে ছুটে গিয়ে স্মৃতির মরদেহ দেখতে পায়।
মামলার বাদী নিহতের ভাই শ্যামু চন্দ্র বর্মণ জানান, তার বোনকে স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন যৌতুক না পেয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে গেছে। তার বোনের গলায় শাশ্বরোধের স্পষ্ট দাগ দেখতে পেয়েছেন। তার বোনের হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তিনি জানান, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই স্মৃতির মৃত্যু হয়েছে বলে ডাক্তারা তাদের নিশ্চিত করেছেন। তবে শ্বশুরবাড়ির কেউই তখন হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। স্মৃতিকে হাসপাতালে রেখে তারা পালিয়ে গেছে।
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাশেদুল হাসান খান বলেন, হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম