শুল্কের প্রভাবে কঠিন প্রতিযোগিতার মুখে পোশাক খাত। কমছে পোশাক খাতের বৈশ্বিক ক্রেতা। বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিও হঠাৎ করে কমতে শুরু করেছে। পোশাক রপ্তানি কমায় বাংলাদেশের সার্বিক রপ্তানিও কমেছে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে পোশাক রপ্তানি বাড়লেও আগস্টে কমেছে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং সেপ্টেম্বরে কমেছে আগের থেকেও বেশি অর্থাৎ ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে পোশাকের রপ্তানি কমে দাঁড়ায় ২৮৪ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই মাসে ছিল ৩০১ কোটি ডলার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে রপ্তানি কমার এ চিত্র ওঠে আসে। এতে দেখা যায়, পোশাকের রপ্তানি কমে যাওয়ার প্রভাবে গোটা রপ্তানি আয় নেতিবাচক ধারা চলছে। সেপ্টেম্বরে ওভেন পোশাক রপ্তানি কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ আর নিট পোশাক রপ্তানি কমেছে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ। গত অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১২৮ কোটি ডলারের। চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে রপ্তানি হয়েছে ১২০ কোটি ডলারের। আর গত অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে নিট পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৭২ কোটি ডলারের। চলতি অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ১৬৩ কোটি ডলারের। আগস্টেও পোশাক রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এর মধ্যে ওভেন কমেছে ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আর নিটে কমেছে ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ব্যবসায়ীরা জানান, শুল্কের প্রভাবে বেশির ভাগ ক্রেতা নতুন করে অর্ডার দিচ্ছেন না। ব্যবসার এ ধীরগতি আগামী দুই থেকে তিন মাস অব্যাহত থাকতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা নতুন শুল্ক কাঠামোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারলে এ সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তারা আরও জানান, চীনা ও ভারতের ওপর মার্কিন শুল্ক বাড়ায় বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং অন্যান্য বাজারেও কঠিন প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছেন। চীনা ও ভারতীয় প্রস্তুতকারকরা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এসব বাজারে রপ্তানি বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, রপ্তানি কমার অন্যতম কারণ বেশির ভাগ ক্রেতাই নতুন করে কোনো অর্ডার দিচ্ছেন না। তারা এখন অতিরিক্ত ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্কের একটি অংশ বাংলাদেশি সরবরাহকারীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। রপ্তানিকারকদের পক্ষে এই অতিরিক্ত চাপ বহন করাও সম্ভব নয়। কারণ, রপ্তানিকারকরা ইতোমধ্যেই প্রাথমিক শুল্ক সমন্বয় এবং উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির প্রভাবসহ বিভিন্ন ধরনের চাপে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই ধীরগতি আগামী দুই থেকে তিন মাস অব্যাহত থাকতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা নতুন শুল্ক কাঠামোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারলে আমাদের রপ্তানি আবারও পুনরুদ্ধার হবে।