বগুড়ার মাঠে মাঠে কৃষকের মাঝে আশার আলো ছড়াচ্ছে আমন ধানের সবুজ চারা। ভালো ফলন ও দাম পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তারা। সোনালি ধান ফলানোর জন্য মাঠে নিরন্তর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তারা। কৃষকের নিবিড় পরিচর্যায় আশানুরূপভাবে বেড়ে উঠবে আমন ধান। চলতি মৌসুমে বগুড়া জেলা জুড়ে পুরোদমে আমন ধানের চারা রোপণ শুরু হয়েছে। জমি তৈরি ও চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
অনুকূল আবহাওয়া, ফসলের মাঠে কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, সময়মতো সার, কীটনাশক প্রয়োগ করলে আমন ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষক ও বগুড়া কৃষি বিভাগ।
জানা যায়, বগুড়ার মাঠে মাঠে আমন ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। বিভিন্ন এলাকায় চোখে পড়ছে সবুজে ভরা চারা রোপণের দৃশ্য। যা একদিকে যেমন প্রকৃতিকে করেছে প্রাণবন্ত। তেমনি কৃষকের মুখেও আনছে আশার আলো। কেউ জমিতে চারা রোপন করছেন। কেউবা চাষ দিচ্ছেন। শ্রাবণের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু করে ভাদ্র মাসের মধ্যে কৃষকরা আমনের চারা রোপন করে থাকেন। আমন ধানের চারা রোপণের এটাই সব থেকে মোক্ষম সময়। গত কয়েক দিনের বৃষ্টির পানি আমন চাষীদের জন্য আর্শীবাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে অপেক্ষাকৃত নিচু জমিগুলোতে আমন চাষের জন্য উপযুক্ত পরিমান পানি জমেছে।
এ সুযোগে চারা রোপণের জন্য দ্রুত জমি প্রস্তুত করছেন স্থানীয় কৃষকরা। সোনালি ধান ফলানোর জন্য মাঠে নিরন্তর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তারা। কৃষকদের নিবিড় পরিচর্যায় আশানুরূপভাবে বেড়ে উঠবে আমন ধান। জেলার শিবগঞ্জ, শেরপুর, নন্দীগ্রাম উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আমন ধানের আবাদ হয়ে থাকে। এছাড়াও জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, শাজাহাপুর, আদমদীঘি ও দুপচাঁচিয়া উপজেলায় আমন চাষ করেন কৃষকরা।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অদিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছরে ১ লাখ ৪৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল। চলতি আমন মৌসুমে জেলায় আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫০০ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৬১ হাজার ২৭৮ মেট্রিকটন। এ পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ৭৭ হাজার হেক্টর জমি। বন্যা না হলে ভাদ্র মাসেই রোপন শেষ হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও বড় ধরণের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ধানের উৎপাদনও অনেক ভালো হবে। সময়মত বৃষ্টি হওয়ায় ধানের চারাগুলো রোপণ শুরু করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার ডোমন পুকুর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, এ বছর তিনি ৬ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণের প্রস্তুতি নিয়েছেন। ইতিমধ্যে ৩ বিঘা জমিতে চারা রোপন সম্পন্ন হয়েছে। বাকি জমিগুলো প্রস্তুত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, গত বছরের চেয়ে খরচ বেশি।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান ফরিদ জানান, চলতি মৌসুমে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে পুরোদমে আমন ধানের চারা রোপণ শুরু হয়েছে। গত বছর জেলায় ১ লাখ ৪৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল। চলতি মৌসুমে জেলায় আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৬১ হাজার ২৭৮ মেট্রিকটন। এ পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ৭৭ হাজার হেক্টর জমি। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করা সম্ভব হবে। কৃষি অফিস থেকে সরকারের বরাদ্দকৃত সার, কীটনাশকসহ সময়মত সেচ দেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। যাতে করে আমনের বাম্পার ফলন হয়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল