বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পরিবেশ পুরস্কার দ্য আর্থশট প্রাইজ ২০২৫- এর ‘ফিক্স আওয়ার ক্লাইমেট’ ক্যাটাগরিতে ফাইনালিস্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা ‘ফ্রেন্ডশিপ’।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে উদ্ভাবনী সমাধান ও টেকসই উদ্যোগের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্তরাজ্যভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান আর্থশট ফাউন্ডেশন রবিবার (৫ অক্টোবর) অনলাইনে এই ঘোষণা দিয়েছে।
ব্রিটেনের প্রিন্স উইলিয়ামের উদ্যোগে ২০২০ সালে চালু হওয়া এই পুরস্কারকে বলা হয় জলবায়ু ও পরিবেশ বিষয়ক বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার। ২০২৫ সালে এটি দশ বছরের মিশনের অর্ধেক পথে পৌঁছেছে। এ বছর ৭২টি দেশের প্রায় ২,৫০০ মনোনয়নের মধ্য থেকে ১৫টি প্রকল্পকে ফাইনালিস্ট হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজন বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে আগামী ৫ নভেম্বর ব্রাজিলের রিওতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে। এর আগেও ২০২১ সালে জ্বালানি খাতে কাজ করা বাংলাদেশের স্টার্টআপ SolShare এই পুরস্কারের ফাইনালিস্ট হয়েছিল।
ফ্রেন্ডশিপ গত দুই দশকে জলবায়ু সংকটে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে। উপকূলীয় এলাকায় ৬ লাখ ৫০ হাজারের বেশি ম্যানগ্রোভ গাছ রোপণ, ২০০ হেক্টরের বেশি ভূমিতে বন পুনরুদ্ধার এবং ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোকে রক্ষায় অবদান রেখেছে সংস্থাটি। এসব উদ্যোগে প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে এবং একই সঙ্গে গড়ে উঠেছে জীবিকার নতুন সুযোগ।
২০০২ সালে রুনা খানের প্রতিষ্ঠিত ফ্রেন্ডশিপ একটি ভাসমান হাসপাতাল দিয়ে যাত্রা শুরু করে এখন দেশের সবচেয়ে দুর্গম অঞ্চলে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামো, আইনি সহায়তা ও জীবিকা উন্নয়নে কাজ করছে। প্রতি বছর প্রায় ৭৫ লাখ মানুষ সরাসরি ফ্রেন্ডশিপের সেবা পান। রুনা খান বলেন, আর্থশট প্রাইজের ফাইনালিস্ট হওয়া বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দৃঢ়তা ও উদ্ভাবনের স্বীকৃতি। ফ্রেন্ডশিপ ২০৩০ সালের মধ্যে জলবায়ু ঝুঁকি হ্রাস, স্থানীয় জনগণের সহনশীলতা বৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়েছে।
প্রিন্স উইলিয়াম এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা এখন দশ বছরের যাত্রার অর্ধেক পথে। এবারের ফাইনালিস্টরা দেখিয়ে দিয়েছে যে পৃথিবীর বড় বড় চ্যালেঞ্জের সমাধান ইতিমধ্যেই আমাদের নাগালের মধ্যেই রয়েছে।’
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ