একটি পুরনো ভিডিও আবারও সামাজিক মাধ্যমে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায় আফ্রিকার শেষ স্বৈরশাসক এসওয়াতিনির রাজা মস্বাতি তৃতীয় সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে পৌঁছেছেন তার ১৫ জন স্ত্রী ও প্রায় ১০০ জন সহচর নিয়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, রাজা মস্বাতি ঐতিহ্যবাহী পোশাকে নিজস্ব প্রাইভেট জেট থেকে নামছেন। তার পেছনে সারিবদ্ধভাবে হাঁটছেন একদল সুসজ্জিত নারী। এরা রাজার স্ত্রী। ভিডিওটির উপর লেখা ছিল সোয়াজিল্যান্ডের রাজা ১৫ স্ত্রী ও ১০০ দাস-দাসী নিয়ে আবুধাবিতে পৌঁছেছেন। তাঁর পিতা রাজা সোভাবুজা দ্বিতীয়ের ছিল ১২৫ জন স্ত্রী।
বলা হচ্ছে, রাজা মস্বাতি ওই সফরে তার ৩০ জন সন্তানকেও সঙ্গে নিয়েছিলেন। যার ফলে বিমানবন্দরে সাময়িক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। রাজকীয় বহরের জন্য একাধিক টার্মিনাল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। অনেকে রাজার বিলাসবহুল জীবনযাপনের বিপরীতে দেশের সাধারণ মানুষের দুরবস্থার কথা তুলেছেন।
একজন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারী লিখেছেন, জনগণ যখন বিদ্যুৎহীন, তখন রাজা উড়ে বেড়ান নিজস্ব জেটে!
অন্য একজন প্রশ্ন তুলেছেন, এই দেশের অর্থনীতি কি এতই শক্তিশালী যে রাজা এমন খরচ বহন করতে পারেন?
আরও এক মন্তব্যে বলা হয়েছে, তিনি ব্যক্তিগত বিমানে ঘুরছেন, অথচ তাঁর জনগণ ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে।
কেউ কেউ আবার রসিকতাও করেছেন, রাজপ্রাসাদে কি কোনও ‘স্ত্রী সমন্বয়ক’ আছেন যিনি সবাইকে ম্যানেজ করেন?
১৯৮৬ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা রাজা মস্বাতি তৃতীয় আফ্রিকার শেষ অবশিষ্ট একনায়কতান্ত্রিক রাজা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাঁর ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি।
কিন্তু দেশের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাত কার্যত ধ্বংসপ্রাপ্ত, সরকারি হাসপাতালে ওষুধের তীব্র ঘাটতি, আর দারিদ্র্যের কারণে বহু শিক্ষার্থী পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে এসওয়াতিনিতে বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৩৩.৩ শতাংশে, যেখানে ৬০ শতাংশ মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে।
রাজা মস্বাতি প্রতি বছর ঐতিহ্যবাহী রিড ডান্স উৎসবে নতুন স্ত্রী নির্বাচন করেন বলে জানা যায়। এ উৎসবটি বহু প্রাচীন হলেও, আধুনিক বিশ্বে এটি ঘিরে রয়েছে সমালোচনা ও বিতর্ক।
সূত্র: এনডিটিভি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল