ইউক্রেনকে দূরপাল্লার টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়, রবিবার (৫ অক্টোবর) দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
পুতিন বলেন, রাশিয়ার গভীরে দূরপাল্লার হামলায় ব্যবহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিলে তা মস্কো-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক পুরোপুরি ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে- ইউক্রেনে নতুন অস্ত্র ব্যবস্থা সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে ‘টমাহক’র মতো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ আমাদের সম্পর্ক নষ্ট করবে। এই সম্পর্কের মধ্যে যে ইতিবাচক সম্ভাবনা ছিল সেটিও শেষ হয়ে যাবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ভ্লাদিমির পুতিনের আলাস্কায় শীর্ষ বৈঠকের দুই মাস যেতে না যেতেই রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আবারও তিক্ত হয়ে উঠেছে। বর্তমানে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে অগ্রসর হচ্ছে এবং ড্রোনগুলো ন্যাটোর আকাশসীমায় ঢুকছে বলে অভিযোগ করেছে কিয়েভ। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার ভেতরে সরাসরি হামলার বিষয়ে ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে ওয়াশিংটন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে না পারায় তিনি হতাশ। রাশিয়াকে ‘‘কাগুজে বাঘ’’ আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনকে দমনে ব্যর্থ হয়ে রাশিয়া নিজের শক্তিহীনতা প্রকাশ করেছে। এর জবাবে পুতিন পাল্টা প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ন্যাটোই কি ‘‘কাগুজে বাঘ’’ নয়; যারা রাশিয়ার অগ্রযাত্রা থামাতে পারেনি?
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স গত মাসে বলেছিলেন, ওয়াশিংটন ইউক্রেনের টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের অনুরোধ বিবেচনা করছে; যা রাশিয়ার গভীরে, এমনকি মস্কোতেও আঘাত হানতে সক্ষম। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
তবে এক মার্কিন কর্মকর্তা ও আরও তিনটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, ইউক্রেনে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর পরিকল্পনা বাস্তবসম্মত নয়। কারণ এসব ক্ষেপণাস্ত্র বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী ও অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হচ্ছে।
টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা প্রায় ২ হাজার ৫০০ কিলোমিটার। অর্থাৎ, ইউক্রেন যদি এই ক্ষেপণাস্ত্র পায়, তাহলে পুরো রাশিয়া এবং ক্রেমলিনই এর নাগালের আওতায় চলে আসবে।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম