চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস ছিল বিশ্বের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ উঞ্চতম মাস।
বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে কোপার্নিকাস জলবায়ু পরিবর্তন পরিষেবা। বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা চলতি মাসেও রেকর্ডের কাছাকাছি অবস্থানে থাকবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের গ্লোবাল ওয়ার্মিং পর্যবেক্ষক সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস ২০২৩ সালের রেকর্ড ছাড়াতে পারেনি। তবে গত বছর একই সময়ের তুলনায় সামান্য শীতল ছিল।
কোপের্নিকাসের জলবায়ু বিষয়ক কৌশলগত প্রধান সামান্থা বার্জেস বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা পরিস্থিতি প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে, বাতাসে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ায় স্থল ও সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা দীর্ঘসময় ধরে উচ্চমাত্রায় রয়েছে।
সেপ্টেম্বর মাসের গড় তাপমাত্রা ১৮৫০-১৯০০ সালে প্রাক-শিল্প যুগের গড়ের তুলনায় ১.৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
এই সামান্য উষ্ণতা বৃদ্ধিকে আপাতদৃষ্টিতে উদ্বেগজনক মনে হচ্ছে না। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাপমাত্রার ভগ্নাংশ পরিমাণ বৃদ্ধিও পৃথিবীর স্থিতিশীলতা ভেঙে দেয় ও চরম আবহাওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। যা ধ্বংসাত্মক জলবায়ু পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
শিল্পবিপ্লবের পর বিপুল পরিমাণে জীবাশ্ম জ্বালানি দাহের ফলে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ বেড়ে যায়। ফলে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ক্রমাগত বেড়েই চলছে।
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, ২০২৫ সাল হবে ২০২৪ ও ২০২৩ সালের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ উঞ্চতম বছর। কারণ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তাপমাত্রা আগের রেকর্ডের কাছাকাছি অবস্থান করছে।
এমন পরিস্থিতিতেই আগামী মাসে ব্রাজিলে শুরু হবে জাতিসংঘের বার্ষিক জলবায়ু সম্মেলন, কপ-৩০। বৈশ্বিক উষ্ণতার মোকাবিলায় সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়টি আলোচনায় প্রাধান্য পাবে।
যদিও উন্নত দেশগুলো প্রতিশ্রুতি অনুযায়ি কার্বন নিঃসরণ কমাচ্ছে না। বরং অনেক দেশ এখনো নতুন তেল, কয়লা ও গ্যাস প্রকল্প অনুমোদন করছে।
কোপের্নিকাস স্যাটেলাইট, জাহাজ, বিমান ও আবহাওয়া স্টেশন থেকে সংগৃহীত কয়েক বিলিয়ন তথ্য পর্যালোচনা করে বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের হার নির্ধারণ করে।
সংস্থাটি ১৯৪০ সাল থেকে শুরু করে প্রতি বছর, প্রতি মাস বা দিনের তাপমাত্রা, বৃষ্টি, বাতাস ইত্যাদির তথ্য সংরক্ষণ করেছে।
বরফের কোর, গাছের বয়স নির্ণয়ক রিং এবং প্রবালের জীবাশ্ম থেকে পাওয়া তথ্য ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা আরও প্রাচীনকালের জলবায়ু সম্পর্কেও ধারণা নিতে পারেন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বর্তমানে পৃথিবী সম্ভবত সোয়া ১ লাখ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণ সময় পার করছে।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এএফপি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত