আফগানিস্তানকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করলেও ওয়ানডেতে শুরুতেই হার জুটেছে বাংলাদেশের ভাগ্যে। আবু ধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে ৫ উইকেটে হেরেছে মিরাজবাহিনী।
এদিন টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৪৮.৫ ওভারে ২২১ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
জবাবে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও রহমত শাহর ফিফটির পর আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও হাশমতউল্লাহ শহিদির দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ১৭ বল বাকি থাকতে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আফগানরা। একই মাঠে শনিবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে লড়বে দুই দল।
রান তাড়ায় গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানের ব্যাটে ইতিবাচক শুরু পায় আফগানিস্তান। মাত্র ৯ ওভারের মধ্যে উদ্বোধনী জুটির পঞ্চাশ রান যোগ করেন তারা। দশম ওভারে ইব্রাহিমকে স্টাম্পড করে এই জুটি ভাঙেন তানভির ইসলাম। পরে সেদিকউল্লাহ অতলকে ক্যাচ আউট করেন তানজিম হাসান সাকিব।
এরপর কমে আফগানদের রানের গতি। তবে তখন উইকেট পড়তে দেননি রহমত শাহ ও রহমানউল্লাহ গুরবাজ। রয়েসয়ে খেলে দুজন মিলে গড়েন ৭৮ রানের জুটি। দুজনই করেন ব্যক্তিগত ফিফটি।
পরপর দুই ওভারে রহমত ও গুরবাজকে আউট করেন সাকিব ও মেহেদী হাসান মিরাজ। রহমতের মতো গুরবাজের ব্যাট থেকেও আসে ঠিক ৫০ রান। দ্রুত ২ উইকেট নিলেও আফগানদের চাপে ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। উল্টো পঞ্চম উইকেটে ৫৯ রানের জুটি গড়ে জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও হাশমতউল্লাহ শহিদি।
সাকিবের ওভারে হ্যাটট্রিক চার মেরে পরে আউট হয়ে যান ৪৪ বলে ৪০ রান করা ওমরজাই। এরপর মোহাম্মদ নবীর সঙ্গে জুটি বাধেন হাশমত। সহজ জয় পায় আফগানিস্তান।
ম্যাচের প্রথম ভাগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে চতুর্থ ওভারে তানজিদ হাসান তামিমের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এক ওভার পর ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন নাজমুল হোসেন শান্তও।
একপ্রান্ত আগলে রেখে হৃদয়ের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন সাইফ হাসান। কিন্তু দলের পঞ্চাশ হওয়ার পর ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়ে যান অভিষিক্ত ব্যাটার। ৫ চারে ৩৭ বলে করেন ২৬ রান। মাত্র ৫৩ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর মন্থর গতিতে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন হৃদয় ও মিরাজ। ১০ ওভারে ৫০ রান করে ফেলা বাংলাদেশের একশ ছুঁতে লেগে যায় আরও ১৬ ওভার।
রয়েসয়ে ব্যাটিংয়ে ক্যারিয়ারের দশম ফিফটি করেন হৃদয়। এরপর ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান ৮৫ বলে ৫৬ রান করা ২৪ বছর বয়সী ব্যাটার। তার বিদায়ে ভাঙে ১০১ রানের জুটি। হৃদয়ের বিদায়ের পর মিরাজও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। রশিদের গুগলিতে এলবিডব্লিউ হন ৮৭ বলে ৬০ রান করা বাংলাদেশ অধিনায়ক।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১২ ইনিংসে তার ৪ ফিফটি ও ১ সেঞ্চুরিতে ৫২.৩৩ গড়ে তার সংগ্রহ ৪৭১ রান। অবসরের আগে ১৫ ইনিংসে ৩২.৮৫ গড়ে ৪ ফিফটিতে ৪৬০ রান করেছিলেন মুশফিক। মিরাজকে ফিরিয়ে মাত্র ১১৫ ম্যাচ ও ১০৭ ইনিংসে ২০০ উইকেট পূর্ণ করেন রশিদ। স্পিনারদের মধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় দ্রুততম তিনি। তার চেয়ে কম ম্যাচে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন শুধু পাকিস্তানের কিংবদন্তি সাকলাইন মুশতাক।
এরপর জাকের আলি অনিক ও নুরুল হাসান সোহানও অল্পেই ফিরে যান। তানজিম হাসান সাকিব ১৭ রান করে দলকে দুইশ পার করান। আর শেষ দিকে একটি করে চার-ছক্কা মারেন তানভির ইসলাম। আফগানিস্তানের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নেন রশিদ ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৪৮.৫ ওভারে ২২১ (সাইফ ২৬, তামিম ১০, শান্ত ২, হৃদয় ৫৬, মিরাজ ৬০, জাকের ১০, সোহান ৭, সাকিব ১৭, হাসান ৫, তাসকিন ৪*, তানভির ১১; বশির ৪-০-২৫-০, ওমরজাই ৯-০-৪০-৩, গাজানফার ৯.১-১-৫৫-৩, খারোটে ১০-১-৩২-১, রশিদ ১০-০-৩২-৩, নবী ৬-০-২৭-০)
আফগানিস্তান: ৪৭.১ ওভারে ২২৬/৫ (গুরবাজ ৫০, ইব্রাহিম ২৩, অতল ৫, রহমত ৫০, হাশমত ৩৩*, ওমরজাই ৪০, নবী ১১*; তাসকিন ৮-০-৫০-০, হাসান ৮-০-৪০-০, তানভির ১০-০-৪২-১, সাকিব ৭-১-৩১-৩, মিরাজ ১০-১-৩২-১, সাইফ ৩.১-০-২৪-০, শান্ত ১-০-৪-০)
বিডি প্রতিদিন/নাজিম