গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্তরা সরকারিভাবে কোনো ওষুধ পাচ্ছেন না। নিজেরা ওষুধ কিনে খাচ্ছেন এবং বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্র্তৃপক্ষ বলছেন বহিঃবিভাগ খোলা থাকাকালীন সময়ে কোনো রোগী এলে তাদের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, গত সোম ও মঙ্গলবার দুই দিনে নতুন করে আরও ছয়জনসহ এ পর্যন্ত ২২ জন অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে রুজিনা বেগম নামের এক নারী অন্যান্য সমস্যাসহ আ্যানথ্রাক্স উপসর্গ নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। অবশ্য স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ওই নারী অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ১ অক্টোবর হতে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত যারা চিকিৎসা নিয়েছেন, তারা হলেন- মধ্য বেলকা গ্রামের সামিউল ইসলাম, সাহাদৎ হোসেন, সবুজ মিয়া, বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আজিজল হক, পশ্চিম বেলকা গ্রামের ভুট্ট মিয়া, আতিকুর রহমান, শহিদুল ইসলাম, বেলকা গ্রামের মোজাহার আলী, মোজাফফর হোসেন, খতিব মিয়া, ফরিদুল হক, রুজিনা বেগম, কিসামত, সদর গ্রামের মোজা মিয়া, মাহবুর রহমান, শাফিকুল ইসলাম, স্বাধীন মিয়া, সকিনা বেগম, তাইজল মিয়া, শিশু ছায়ফান বেগম, আফরিন বেগম, ছালদিয়া ইসলাম ও রইসুল মিয়া। সরেজমিন বেলকার কিশামত সদর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, তাদের কারও এক হাতে, কারও দুই হাতেই ফোসকা পড়েছে। এর মধ্যে শুধু মোজাফফর আলীর বাম চোখ মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়েছে। মোজাফফর আলী বলেন, ‘২৭ সেপ্টেম্বর অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত গরু জবাই করে মাংস কাটাকাটিতে অংশ নিয়েছিলাম। এর দুই দিন পর বাম হাতে ও বাম চোখে ফোসকা দেখা দেয়। এ অবস্থায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। সেখানে ভর্তি হতে চাইলে, চিকিৎসক ওষুধ লিখে দিয়ে বিদায় করে দেন। কোনো ওষুধ দেননি। বাইর থেকে ওষুধ কিনে এনে খাচ্ছি এবং বাড়িতে আছি। প্রতিদিন ১০০ টাকার ওষুধ লাগছে। একই কথা বলেন, ওই গ্রামের মোজা মিয়া, নুরুন্নবী মিয়া ও নুর নাহার বেগম। তারা বলেন, তাদের পক্ষে এত দামি ওষুধ কিনে খাওয়া সম্ভাব হচ্ছে না। ওষুধের দাম অনুযায়ী ২০ দিনের জন্য প্রায় ৩ হাজার টাকার ওষুধ লাগবে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দিবাকর বসাক বলেন, অ্যানথ্রাক্স উপসর্গ নিয়ে যারা চিকিৎসা নিতে এসেছিল, তাদের মধ্যে কেউ গুরুতর ছিল না। বেশির ভাগ রোগী রাতে এসেছিল, সে কারণে তাদের ওষুধ দেওয়া সম্ভব হয়নি। গত সোমবার ও মঙ্গলবার নতুন করে আরও ছয়জন চিকিৎসা নিয়ে গেছেন।