বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি চলতি বছরই চূড়ান্ত হতে যাচ্ছে। তবে চুক্তির কয়েকটি বিষয় নিয়ে এখনো দুই পক্ষের মধ্যে মতৈক্য হয়নি। এ বিষয়গুলো নিষ্পত্তির জন্য চলতি অক্টোবর মাসে ঢাকায় এবং নভেম্বর মাসে টোকিওতে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্র জানায়, সেপ্টেম্বরে টোকিওতে অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত বৈঠকেও কয়েকটি ইস্যু অনির্ধারিত থেকে যায়। তাই উভয় দেশ আরও দুটি বৈঠকের মাধ্যমে বাকি বিষয়গুলো সমাধান করতে চায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনা শেষ হয়েছে। এখন চুক্তি স্বাক্ষরের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি চলছে। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষরের আগে একাধিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। গত ৩ থেকে ১২ সেপ্টেম্বর টোকিওতে সপ্তম দফা আলোচনায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ফরেন ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট উইংয়ের প্রধান আয়েশা আখতার। জাপানের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক কূটনীতি বিষয়ক উপমহাপরিচালক ইজুরু কোবায়াশি। আলোচনায় পণ্য বাণিজ্য, অর্থনৈতিক জাতীয়তা নির্ধারণ, সেবা খাত, বিনিয়োগ, ই-কমার্স ও মেধাস্বত্বসহ বিভিন্ন বিষয়ে ফলপ্রসূ মতবিনিময় করে উভয় পক্ষ। ২০২৪ সালের মে মাসে শুরু হওয়া এ আলোচনার আগে এক যৌথ সমীক্ষায় দেখা যায়, চুক্তি কার্যকর হলে জাপানের বেসরকারি খাত বাংলাদেশে প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগে আগ্রহী। বর্তমানে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৪২৮ কোটি ডলার। ধাপে ধাপে শুল্ক হ্রাসের মাধ্যমে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চুক্তি কার্যকর হলে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়বে, বিনিয়োগের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পর জাপানের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ কাজুইকি কাটাওকা বলেন, চুক্তি সম্পর্কিত কিছু বিষয় নিয়ে আরও আলোচনা দরকার। তবে আশা করছি, চলতি বছরের শেষ নাগাদ অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি চূড়ান্ত হবে।
তিনি আরও বলেন, এ চুক্তি রপ্তানি-আমদানি ও শুল্ক কাঠামোর সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ায় উভয় দেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতের স্বার্থ সমন্বয় করতে সময় লাগছে। লক্ষ্য হলো এমন একটি ‘উইন-উইন’ পরিস্থিতি তৈরি করা, যা দুই দেশের জন্যই লাভজনক হবে।