বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গত ১০ বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী দৃশ্যমান কিছু করেনি জামায়াত। পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) নিয়ে এত দিন সমানে চিৎকার করলেও এখন সুর নরম করেছে। বর্তমানে দলটি নির্বাচনের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। পিআরের মতো গণভোটও মানুষ বুঝতে পারছে না।
রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের (আইডিইবি) মাল্টিপারপাস হলে গতকাল দুপুরে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন কেয়ারটেকার কল্যাণ পরিষদ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের গভর্নর প্রিন্সিপাল মাওলানা শাহ মো. নেসারুল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- রেসিডেনশিয়াল মডেল কলেজের খতিব ও ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, জামায়াতে ইসলামী রাজনীতিতে দাঁড়াতে পারছিল না। জিয়াউর রহমান সেই সুযোগ করে দিয়েছিলেন। এরপর আমরাও তাদের সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত ১০ বছরে শেখ হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে দলটি দৃশ্যমান কোনো কাজ করেনি।
ধর্মকে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার কাজে ব্যবহারের অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, জামায়াতের টিকিট কাটলে জান্নাতের টিকিট কাটা হবে, এটা কোথায় আছে? আমাকে বলুক। দেখিয়ে দিক কোথায় আছে। এটা ঠিক না। ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার কথা কখনোই ইসলাম সমর্থন করে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ১৫-১৬ বছর ধরে দেখেছি, ফ্যাসিস্ট হাসিনা কী করে প্রতিটি মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আমার ধর্ম পালনের অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছে। তারপর আবার দাবি করে যে, তারা ইসলামের পক্ষে কাজ করেছে। আরও দুঃখ হয় তখন, যখন দেখি আমাদের দেশেরই কিছু আলেম-ওলামারা তার সঙ্গে মিটিং করে তাকে কওমি জননী উপাধি দিয়েছিলেন।
ইন্দোনেশিয়ার উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, সেখানে সরকার যেই হোক কমিউনিস্ট বা অন্য কেউ, ইসলামী বা গণতান্ত্রিক অ্যাসোসিয়েশন অব ওলামা নামের শক্তিশালী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয় না। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নেই। তবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দল বিএনপি ধর্মীয় মূল্যবোধকে সবসময়ই প্রাধান্য দিয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটা সুন্দর, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হবে, যাতে গণতান্ত্রিক সরকার ও গণতান্ত্রিক পার্লামেন্ট গঠন সম্ভব হয়। সেই পার্লামেন্টেই জাতীয় সমস্যাগুলো উত্থাপন ও সমাধান হবে, এটাই হবে জনগণের সিদ্ধান্ত।