ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে আয়োজনে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) চিঠি দিয়েছে। গতকাল ইসি সচিব আখতার আহমেদ এ তথ্য জানান।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ নভেম্বর একই দিনে সংসদ ও গণভোট নির্বাচনের ঘোষণা দেন। এর এক সপ্তাহের মাথায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ চিঠি দিল। এতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোটের আয়োজন করতে বলা হয়েছে।
গতকাল ইসি সচিব আখতার আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এই চিঠি পেয়েছি। সরকার চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, গণভোট করা ইসির দায়িত্ব। এক্ষেত্রে একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট করার জন্য বলা হয়েছে। এখন নির্বাচন কমিশন গণভোট অধ্যাদেশের অপেক্ষায় রয়েছে।
সরকার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনে একই সঙ্গে গণভোট করার সিদ্ধান্ত দেওয়ায় নির্বাচন কমিশনকে গণভোটের প্রস্তুতিও সমন্বয় করতে হবে। প্রায় ৩৪ বছর পর আরেকটি গণভোট এবং দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক দিনে একসঙ্গে দুটি ভোট করতে হবে। এ ছাড়া এবারই প্রথম পোস্টাল ব্যালটে প্রবাসীদের ভোটগ্রহণ হবে। দেশের প্রায় পৌনে ১৩ কোটি ভোটারের সঙ্গে প্রবাসের লাখ দশেক ভোটারকে নিয়ে এ নির্বাচন হবে। ফলে এই কর্মযজ্ঞ সামলাতে কী কী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে নির্বাচন কমিশনকে- সেটি সামনে এসেছে।
দ্বিগুণ কর্মযজ্ঞের ভোট, ইসির চ্যালেঞ্জ : ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে ইসির। সংসদ নির্বাচনের জন্য পৌনে ১৩ কোটি ভোটার ও প্রায় ১০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটার বিবেচনায় রেখে ব্যালট পেপার মুদ্রণের পরিকল্পনা করেছে ইসি। ৪৩ হাজার ভোট কেন্দ্রে ২ লাখ ৪৫ হাজার ভোটকক্ষ থাকবে। ৯ থেকে ১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭ থেকে ৮ লাখ সদস্য নিয়োজিত থাকবে ভোটে।
ইসির নির্দেশনায় রিটার্নিং অফিসারের তত্ত্বাবধানে ৩০০ আসনে সার্বিক নির্বাচন পরিচালনা করা হয়। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে ইসি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে শেষ ধাপের সংলাপ চলছে।
কাজ বাড়বে, গণনায় ঢের সময় লাগবে : ইসির সাবেক কর্মকর্তারা বলেছেন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বাড়ানোর পাশাপাশি গণভোট ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভালো প্রশিক্ষণের বিষয় রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। এক দিনে সংসদ ও গণভোটের ক্ষেত্রে ভোটকক্ষ বাড়িয়ে দিলে সুচারুভাবে সম্পন্ন করা যায়। কেন্দ্র না বাড়ালেও চলবে। ব্যালট পেপার গণনার সময় দুই সেট লোকবল লাগবে। এক সেট সংসদ নির্বাচনের ভোট গণনা করবে, আরেকট সেট ‘হ্যাঁ’ আর ‘না’ ভোট গণনা করবেন।
তারা বলেন, সংসদ ও গণভোট একসঙ্গে হলে, ইতিবাচক দিক হলো ভোটার উপস্থিতি। গণভোটে তো ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যেতে চায় না; প্রার্থীরা ভোটার স্লিপ দেয় না। এখন দুই ভোট এক দিনে হলে, একটা ভালো (সংখ্যক) ভোটার কেন্দ্রে যাবে। যারা জাতীয় সংসদে ভোট দেবে তারা কেন্দ্রে যাবে, সঙ্গে গণভোটও দেবে।