চাঁদাবাজির অভিযোগে রাজধানীর বকশীবাজারে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল রাত ১০টার দিকে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষে মুহূর্তের মধ্যে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় মাদ্রাসাটি। এতে আহত সাত শিক্ষার্থীকে ঢাকা মেডিকেল (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মাদ্রাসাটির সামনে মোতায়েন করা হয় বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। তদন্ত কমিটি গঠন করে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে জানিয়েছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। আহতরা হলেন- সাদিক, মইন, ইলিয়াস, ওমর ফারুক, আবু বক্কর, ওয়ালিদ ও এনামুল। তাদের সবারই মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এদিকে, ঘটনাস্থলে থাকা কালের কণ্ঠের রিপোর্টার রাইয়ানকে লাঞ্ছিত করে তার মুঠোফোন ও লাইভ ডিভাইস কেড়ে নেয় একদল শিক্ষার্থী। লাঞ্ছিত করা হয় আরও বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীকেও। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দিবাগত রাতে মাদ্রাসার ভিতরে মিলাদ মাহফিলের অনুষ্ঠান চলছিল। মাহফিলে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে কয়েকজন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জানা গেছে, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের রায় ঘোষণা করায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে মিলাদ মাহফিলটির আয়োজন করা হয়। তখন ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের জয়নাল ও হানিফের নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থী সেখানে গিয়ে বৈষম্যবিরোধীদের পক্ষের ওমর ফারুকের প্রতি চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
চকবাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল খায়ের বলেন, ‘মিলাদ মাহফিল চলাকালে কোনো এক বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।’
মাদ্রাসাটির প্রিন্সিপাল প্রফেসর ওবায়দুল হক বলেন, আমি নতুন এসেছি। এসেই মাদ্রাসার পাশের পুরোনো ট্রাইব্যুনালের রড বিক্রিসহ বিভিন্ন অভিযোগ পাই। সেগুলোর তদন্ত চলছে। এরই মধ্যে আমাদের অনুমতি নিয়েই মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল। একপর্যায়ে এটি সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।