র্যাঙ্কিংয়ে অনেকটা ব্যবধানে পিছিয়ে থাকলেও আত্মবিশ্বাসে কোনো ঘাটতি নেই বাংলাদেশ দলের। বর্তমানে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ১৮৪তম, আর হংকং ১৪৬তম অবস্থানে। শক্তির বিচারেও অনেকেই এগিয়ে রাখছেন হংকংকে, বিশেষ করে তাদের স্কোয়াডে থাকা একাধিক অভিজ্ঞ ও বিদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলারের কারণে।
তবে সেই হিসাব উপেক্ষা করে, ঘরের মাঠ, গ্যালারিভর্তি দর্শক, আর নতুন বংশোদ্ভূত ফুটবলারদের নিয়ে গড়া দল নিয়ে প্রস্তুত লড়াইয়ে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
হংকং স্কোয়াডে বৈচিত্র্যের ছাপ স্পষ্ট। দলটির ২৫ সদস্যের স্কোয়াডে পাঁচজন ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত ফুটবলার রয়েছেন। পাশাপাশি আরও আছেন জাপান, ক্যামেরুন, জার্মানি ও নিউজিল্যান্ডের ফুটবল শিকড় থেকে আসা খেলোয়াড়রা।
তাদের মধ্যে কয়েকজন উল্লেখযোগ্য ফুটবলার হলেন- এভেরতন কামারগো, তিনি ২০২৩ সাল থেকে হংকংয়ের হয়ে খেলছেন এবং এরই মধ্যে ১৯ ম্যাচে ১০টি গোল করে নিজেকে দলের অন্যতম ভরসা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। নিউজিল্যান্ড বংশোদ্ভূত ফরোয়ার্ড ম্যাথু এলিয়ট ২০২১ সাল থেকে জাতীয় দলের জার্সিতে খেলছেন, ৪২ ম্যাচে করেছেন ১১ গোল। এছাড়া আক্রমণভাগে আছেন অভিজ্ঞ দুই খেলোয়াড় জুনিনিও (২২ ম্যাচ) ও স্তেফান পেরেইরা (২০ ম্যাচ), তারা হংকংয়ের আক্রমণভাগকে করে তুলেছেন বেশ শক্তিশালী ও সংগঠিত।
বাংলাদেশ শিবিরেও আশার আলো আছে, যদিও ইনজুরি ও সীমিত সময়ের প্রস্তুতি কিছুটা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও সুমন রেজা ছিটকে গেছেন চোটের কারণে, তপু বর্মন ও আল আমিন পুরোপুরি ফিট নন। তবে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা দলের সাম্প্রতিক অনুশীলন ও বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়দের মান ও অভিজ্ঞতাকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন।
আজকের ম্যাচে নজর থাকবে হামজা চৌধুরী ও শামিত সোমের ওপর, তদের দায়িত্ব থাকবে মাঝমাঠ থেকে আক্রমণের ছন্দ তৈরি করা। ফরোয়ার্ড লাইনে ইতালিপ্রবাসী ফাহমিদুল, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ও রাকিব হোসেনরা যদি সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারেন, তাহলে বহুদিনের গোল খরা কাটার সম্ভাবনা রয়েছে।
কোচ হাভিয়ের কাবরেরা বলেন, 'আমরা প্রায় ১০ দিনের মতো প্রস্তুতি নিয়েছি। আমাদের জন্য এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। পুরো দল প্রস্তুত, আর ঘরের মাঠে গ্যালারিভর্তি দর্শকের সামনে খেলার সুযোগ আমাদের বাড়তি প্রেরণা দেবে। হামজা, আমিত, জায়ান—এদের উপস্থিতি আমাদের মান ও আত্মবিশ্বাস দুই-ই বাড়িয়েছে। তবে শুধু তারাই নয়, পুরো দলই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করবে।'
কাবরেরা মনে করেন, শক্তির দিক থেকে হংকং এগিয়ে থাকলেও ফারাকটা খুব বেশি নয়। তিনি বলেন, 'দলে ভিনদেশি খেলোয়াড় থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। শেষ পর্যন্ত এটা একটা দল। হংকংয়ের জাতীয় দল। আমাদের মনোযোগ আমাদের খেলা ও লক্ষ্যেই।'
অন্যদিকে, অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া এটিকে বলেছেন, 'বাঁচা-মরার লড়াই। এই ম্যাচটা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। জয় ছাড়া কিছু ভাবছি না।'
কোচের কথায়ও ছিল স্পষ্ট বার্তা, 'ডু অর ডাই পরিস্থিতি হলেও আমরা লড়াই চালিয়ে যাব। তিন পয়েন্ট অর্জন করাই লক্ষ্য।'
বিডি প্রতিদিন/মুসা