অ্যাশেজের প্রথম টেস্ট মাত্র দুই দিনেই শেষ। তৃতীয় দিনে খেলা গড়ানোর আশা করা হলেও ট্রাভিস হেডের বিধ্বংস ইনিংসে সেটি আর হয়নি। ম্যাচ দুইদিনে শেষ হয়ে যাওয়ার ফলে ৩ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৪ কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)।
হেডের ৮৩ বলে ১২৩ রানে ইংল্যান্ডের দেওয়া ২০৫ রানের টার্গেট অস্ট্রেলিয়া করে ফেলে মাত্র ২৮.২ ওভারে। রান তাড়ায় ওভারপ্রতি ৭+ রান করে তুলে অস্ট্রেলিয়া। হেড সেঞ্চুরি করেছিলেন ৬৯ বলে, যা রান তাড়ায় চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে দ্রুততম। শুধু হেড নন, ইংল্যান্ডের বাজবল অ্যাপ্রোচে খেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার বাকিরাও। মার্নাস লাবুশেন ৪৯ বলে করেন ৫১, জ্যাক ওয়েদারেল্ডের ব্যাট থেকে ৩৪ বলে আসে ২৩।
ইংল্যান্ডের দেওয়া ২০৫ রানের লক্ষ্য ২৮.২ ওভারেই পেরিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ১৭২ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে করে ১৬৪, অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে আউট হয়েছিল ১৩২ রানে। পার্থ টেস্ট শেষ হয় মাত্র দুদিনে।
ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, অ্যাশেজের দুই দিনে খেলা দেখেছেন রেকর্ড ১ লাখ ১ হাজার ৫১৪ দর্শক। এর মধ্যে প্রথম দিন ৫১ হাজার ৫৩১ জন এবং দ্বিতীয় দিন ৪৯ হাজার ৯৮৩ জন গ্যালারিতে ছিলেন। এতে গত বছরের চার দিনে শেষ হওয়া ভারত–অস্ট্রেলিয়া টেস্টের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে। তৃতীয় দিনের টিকিটও প্রায় বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ম্যাচ দুই দিনে শেষ হওয়ায় দর্শকরাও পড়েছেন ক্ষতির মুখে।
পার্থে অতিমানবীয় সেঞ্চুরি হাঁকানো ট্র্যাভিস হেডও নিজের ইনিংস শেষে বলেন, ‘যারা কাল আসতে পারবে না—তাদের জন্য খারাপ লাগছে। স্টেডিয়াম তো আবারও ভর্তি হওয়ার কথা ছিল।’ এছাড়া ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী টড গ্রিনবার্গ গতকাল শনিবার খেলায় শুরুর আগে রসিকতা করে বলেছিলেন, ‘আমি চাই না ম্যাচ দুই দিনেই শেষ হয়ে যাক। এতে আমাদের, ব্রডকাস্টারদের, স্পনসরদের সবাইকেই অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে।’
গত মাসের বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) সিএ জানিয়েছিল, তারা ইতোমধ্যে ১১.৩ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার ঘাটতিতে আছে। ভারতের সেই পাঁচ টেস্টের সফরের মৌসুমেই নাকি এই আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু ভারত পৃথিবীর যে প্রান্তেই যাক, তাদের খেলা সাধারণত বিশাল রাজস্ব আনে। তবে সিএ চেয়ারম্যান মাইক ব্যার্ড দাবি করেছিলেন, এবারের ক্ষতি অনেকটাই কাগজে-কলমে। কারণ, ভারত সিরিজের আয় দুটি অর্থবছরে ভাগ হয়ে গেছে।
দুই দিনে খেলা শেষ হয়ে গেলেও টেলিভিশনে দর্শকের আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। ‘ফক্সটেল’ জানিয়েছে, যে পরিমাণ দর্শক অ্যাশেজের প্রথম দিনের সম্প্রচার দেখেছে, সেটা ব্রডকাস্টিং কম্পানিটির ইতিহাসের সর্বোচ্চ। এছাড়া ‘সেভেন নেটওয়ার্ক’ও প্রচুর দর্শক পেয়েছে। আগামী ২৯ নভেম্বর ক্যানবেরায় অ্যাশেজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম