হানিট্র্যাপ চক্রের প্রতারণার ভিডিও ধারণ করায় খুন হন গাজীপুরের সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন। গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার নাজমুল করিম খান গতকাল এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলেই আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হবে। এদিকে সাংবাদিক তুহিন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত সাতজনকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। খুনের সঙ্গে জড়িত আরেক আসামি শহীদুল ইসলামকে র্যাব কিশোরগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে। এ নিয়ে গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়াল ৮-এ। গাজীপুর পুলিশ কমিশনার বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাদশা নামের এক ব্যক্তি ব্যাংক থেকে ২৫ হাজার টাকা তুলে ফিরছিলেন। পথে তিনি হানিট্র্যাপ চক্রের খপ্পরে পড়েন। চক্রের সদস্য গোলাপী নামে একজন নারী তাকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেন। বিষয়টি টের পেয়ে যান বাদশা। তিনি গোলাপীর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। তাকে ধাক্কা দিয়ে সরে আসতে চান। এ সময় ওত পেতে থাকা চক্রের অন্য সদস্যরা বাদশাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। প্রাণ বাঁচাতে বাদশা দৌড় দেন। সেখানেই ছিলেন সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন। চোখের সামনে সন্ত্রাসীদের এমন তৎপরতায় নিজেকে স্থির রাখতে পারেননি। নিজের ফোনের ক্যামেরা অন করেন। পেশাগত দায়িত্বে সন্ত্রাসীদের হামলার ভিডিও করতে শুরু করেন সাংবাদিক তুহিন। কমিশনারের ভাষ্য, ভিডিওটি দেখে ফেলেন সন্ত্রাসীরা। তারা তুহিনকে ভিডিওটি মুছে ফেলতে বলেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি। একপর্যায়ে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তুহিনকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান। পুলিশ কমিশনার বলেন, ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হত্যাকাণ্ডে জড়িত সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে। শুক্রবার দিবাগত রাতে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের ধরা হয়। এর মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব, অন্য ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে জিএমপি। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে আমরা আটজনকে চিহ্নিত করেছি।
র্যাবের পৃথক সংবাদ সম্মেলন : এদিকে গতকাল সকালে গাজীপুর মহানগরীর পোড়াবাড়ী র্যাব ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার কে এম এ মামুন খান চিশতী দাবি করেন, গ্রেপ্তার ছিনতাইকারী মো. স্বাধীন হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। আসাদুজ্জামান তুহিনকে টার্গেট করেই হত্যা করা হয়েছে।
গাজীপুর মহানগরীর ব্যস্ততম চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে একটি মার্কেটের ভিতর প্রকাশ্যে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৮) দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন।