যশোর-১ আসনে প্রার্থিতার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছেন বিএনপির মফিকুল হাসান তৃপ্তি, খায়রুজ্জামান মধু, হাসান জহির ও নূরুজ্জামান লিটন। তবে দলীয় মনোনয়ন কে পাবেন এখনো ঠিক হয়নি। এরই মধ্যে জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। তিনি দলের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আজীজুর রহমান।
যশোরের ভারত সীমান্তবর্তী শার্শা উপজেলার পুরোটা নিয়ে যশোর-১ আসন। দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল এ আসনের মধ্যে। ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের বড় অংশ এ বন্দর ব্যবহার করেই হয়। এসব কারণে যশোর-১ আসনটি বরাবরই সব দলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বিগত চারটি নির্বাচনে এ আসনটিতে একটানা সংসদ সদস্য ছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পোদ্যোক্তা শেখ আকিজউদ্দিনের ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ আফিলউদ্দিন। তবে এবারের নির্বাচনি মাঠে আওয়ামী লীগ না থাকায় এ আসনে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থীর মধ্যে। আসনটিতে জামায়াত তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করে নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। ২০০১ সালের নির্বাচনে যশোর-১ আসনে চারদলীয় জোটের প্রার্থী হয়েছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আজীজুর রহমান। ত্রয়োদশ নির্বাচনে এ আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে আজীজুর রহমানই চূড়ান্ত।
অন্যদিকে এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে রয়েছেন চার নেতা। তাঁরা হলেন দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, শার্শা উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা খায়রুজ্জামান মধু, সভাপতি হাসান জহির ও সাধারণ সম্পাদক নূরুজ্জামান লিটন। প্রত্যেকেই দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। প্রত্যেকেই বলছেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যাঁকেই প্রার্থী করবেন, তাঁকে বিজয়ী করতে সবাই একসঙ্গে কাজ করবেন।
২০১৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পাওয়া মফিকুল হাসান তৃপ্তি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় দল শক্তিশালীকরণে কাজ করছি। নেতা-কর্মীদের চাঙা রেখেছি। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করছি। এ সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে দল আবারও আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে আশা করছি।’
শার্শা উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা খায়রুজ্জামান মধু বলেন, ‘ওয়ান-ইলেভেনের পর বহু অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছি। মিথ্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদ দিয়েছিল। ১১ মাস জেল খেটেছি। এখনো প্রতিদিন নিয়ম করে দলীয় কার্যালয়ে বসি, নেতা-কর্মীদের কথা শুনি, একসঙ্গে কর্মসূচি পালন করি। ফলে আমি মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’ শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাসান জহির বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনে যশোর-১ আসনে দল থেকে দুজনকে প্রথমে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে আমি ছিলাম। গত ১৭ বছর মাঠ ছাড়িনি, ৪৪টি মামলা খেয়েছি। ২০২৩-এর এপ্রিলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনের সময় মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিল। এলাকার নেতা-কর্মীদের জামিন করানোসহ সব সময় পাশে থেকেছি। তবে দল যাঁকে মনোনয়ন দেবে, তাঁকে বিজয়ী করতে সবাই একসঙ্গে কাজ করব।’ শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূরুজ্জামান লিটন বলেন, ‘২০১৮ সালে নমিনেশন চেয়েছিলাম। দুর্দিনে দলের কর্মীদের পাশে ছিলাম।
দলের সব সিদ্ধান্ত কাঁটায় কাঁটায় মেনে চলেছি। দলও এবার তরুণ প্রার্থী খুঁজছে। সে হিসেবে আমি মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।’
জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মাওলানা আজীজুর রহমান বলেন, ‘যশোর-১ আসনে বিএনপি ও জামায়াতের ভোটার প্রায় সমান সমান। ফলে এ আসনে সুইং ভোটার যাঁরা আকৃষ্ট করতে পারবেন তাঁরাই বিজয়ী হবেন।’