নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সশস্ত্র অবস্থায় দলবদ্ধভাবে মা ইলিশ শিকারে নামছে জেলেরা। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান করলেই হামলার শিকার হচ্ছে আভিযানিক দল। গত দুই দিনে বরিশালের দুই নদীতে জেলেদের হামলায় আভিযানিক দলের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। সশস্ত্র জেলেদের হামলা থেকে নিজেদের রক্ষায় দুই দফায় ২৮ রাউন্ড গুলি ছুড়তে হয়েছে তাদের। এতে জেলেরাও আহত হয়েছে। গত ১৫ দিনে ৫৮৯ জেলেকে কারাদ দেওয়া হলেও মা ইলিশ সংরক্ষণে তাদের থামানো যাচ্ছে না। বরিশালের হিজলা উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘মূল মেঘনা নদীতে মা ইলিশ ডিম ছাড়ে। প্রজনন মৌসুমে শিকার বন্ধ করতে না পারলে ইলিশের উৎপাদন কমে যাবে। জেলেরা এসব মানে না। বর্তমানে নদীতে জেলেরা সংঘবদ্ধ হয়ে সশস্ত্র অবস্থায় ইলিশ মাছ লুট করছে। গতকাল মেঘনার ধুলখোলা অংশে একটি জেলে নৌকা ধাওয়া করা হয়। কিছু সময় পর ২০টি দ্রুত গতির নৌকা ২০-২২ জন জেলে বাঁশের লাঠি, দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাথর নিয়ে হামলা করে। তাদের হামলায় অভিযানিক দলের ১৫ জন আহত হয়েছেন। নদীতে বড় ধরনের অভিযান ছাড়া কোনো উপায় নেই।’
হামলার শিকার ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘কালাবদর নদীতে অভিযানের সময় ৭-৮টি নৌকায় ৫০-৬০ জন জেলে লাঠিসোটা ও ইট নিয়ে চড়াও হয়। ইট ও লাঠির আঘাতে স্পিডবোটের চালক আহত হয়। আত্মরক্ষার জন্য আনসার সদস্যদের গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়। গুলির মধ্যেও তারা অভিযানিক স্পিডবোটের ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে।’ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘সমন্বিতভাবে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছি। লজিস্টিক সাপোর্ট বাড়ানোসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়ানো হচ্ছে।’ বিভাগীয় মৎস্য দপ্তর জানিয়েছে, গত ১৫ দিনে ৫৮৯ জেলের কারাদ দেওয়া ছাড়াও ২৫ লাখ ৬৯ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ৯৮ লাখ ৫২ হাজার ৮০০ মিটার কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।