রাশিয়ার শর্ত মেনে ইউক্রেনকে যুদ্ধ বন্ধে চুক্তি করতে বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, এখন সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো যুদ্ধ থামানো, আলোচনায় যাওয়া যাবে পরে। একইসঙ্গে বর্তমান যুদ্ধরেখাকেই ভবিষ্যৎ শান্তি আলোচনার ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করতে ইউক্রেনকে পরামর্শ দিয়েছেন ট্রাম্প। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
গত শুক্রবার ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে এ কথা বলেন ট্রাম্প। রবিবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানান, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে তার ‘সৌহার্দ্যপূর্ণ’ বৈঠক হয়েছে শুক্রবার। তবে তিনি জেলেনস্কিকে ডনবাস অঞ্চল সম্পূর্ণভাবে রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে যে খবর বের হয়েছে সেটি অস্বীকার করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘না, আমরা সেটা নিয়ে কথা বলিনি’। তিনি আরও বলেন, ‘তাদের (ইউক্রেনের) উচিত যুদ্ধরেখার যেখানে এখন তারা আছে, সেখানেই থেমে যাওয়া।’ ট্রাম্পের ভাষায়, ‘ডনবাস অঞ্চলের প্রায় ৭৮ শতাংশ এলাকা ইতোমধ্যেই রাশিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। ইউক্রেন চাইলে পরে কোনো সময় এ বিষয়ে আলোচনায় যেতে পারে, কিন্তু এখন সবচেয়ে জরুরি বিষয় হচ্ছে যুদ্ধ থামানো।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের দপ্তর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। দনবাস অঞ্চলের মধ্যে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত এবং এ অঞ্চল সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু ২০১৪ সাল থেকেই। সেই সময় রাশিয়ার সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ক্রিমিয়া দখলের পর নিজেদের স্বাধীন প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করে। এরপর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে তথাকথিত ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করার পর থেকে ওই এলাকার বেশির ভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়া।
এদিকে রাশিয়ার বেলগোরোড অঞ্চলে ইউক্রেনের হামলায় দুজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় গভর্নর এ কথা জানিয়েছেন। বেলগোরোডের গভর্নর ভিয়াচেস্লাভ গ্লাদোকভ সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেন, ‘ইয়াসনে জোরি গ্রামের একটি কৃষি প্রতিষ্ঠানে ড্রোন থেকে বিস্ফোরক নিক্ষেপ করা হলে দুই বেসামরিক লোক নিহত হন। এ হামলায় তারা ঘটনাস্থলেই নিহত হন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিস্ফোরণে পায়ে গুরুতর জখম এক ব্যক্তির অস্ত্রোপচার চলছে।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়ার গভীরে আঘাত করতে সক্ষম আমেরিকান দূরপাল্লার টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে তার দেশকে সুরক্ষিত করার আশায় সাক্ষাতের কয়েকদিন পরই এ হামলা চালানো হয়। কিন্তু ট্রাম্প ইউক্রেনকে রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি করতে বলার পর জেলেনস্কি খালি হাতে ফিরে যান। শীত ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে মস্কো সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনের বেসামরিক অবকাঠামোতে আক্রমণ বাড়িয়েছে। হাজার হাজার মানুষ তাপ ও আলো ছাড়াই রয়েছে। এর পাল্টা আঘাত হানতে রাশিয়ার পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলের পাশাপাশি তার তেল ও গ্যাস স্থাপনাগুলোতে হামলা জোরদার করে ইউক্রেন। সূত্র: রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান,
বিডি প্রতিদিন/এএম