মাদারীপুরে আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ইজিবাইকচালক মো. সাজ্জাদ হোসেন খানকে মৃত্যুদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শরীফ এ এম রেজা জাকের এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট শরীফ সাইফুল কবীর। তিনি জানান, দীর্ঘ ছয় বছর বিচারিক কার্যক্রম শেষে আদালত সাজ্জাদ হোসেনকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই মাদারীপুর শহরের পূর্ব খাগদী এলাকার একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে অজ্ঞাত এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন নিহতের বাবা মজিবর ফকির মরদেহ শনাক্ত করে জানান, এটি তার মেয়ে দীপ্তি।
ঘটনার পর মজিবর ফকির মাদারীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে তদন্তে নামে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৮। তদন্তে বেরিয়ে আসে ভয়াবহ তথ্য—ইজিবাইকচালক সাজ্জাদ হোসেন দীপ্তিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে মরদেহ পুকুরে ফেলে দেন।
র্যাব জানায়, সাজ্জাদ আগে শিশু হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন এবং ২০১১ সালে মুক্তি পান। ২০১৯ সালের ১১ জুলাই বৃষ্টির দিনে দীপ্তি চরমুগরিয়া যাওয়ার জন্য তার ইজিবাইকে ওঠেন। এক পর্যায়ে সাজ্জাদ তাকে জোর করে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও হত্যা করেন। পরে মরদেহ বিদ্যুতের তার দিয়ে বেঁধে ইটসহ পুকুরে ফেলে দেন। দুই দিন পর মরদেহটি ভেসে উঠলে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। দ্রুত বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় দীপ্তির বাবা মজিবর ফকির বলেন, ‘আমার মেয়ের হত্যাকারী আজ আইনের কাছে জবাবদিহি করেছে। আমরা এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেয়েছি।’
মামলার পিপি শরীফ সাইফুল কবীর বলেন, ‘এটি ছিল অত্যন্ত নৃশংস একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলা। আদালত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেছেন, আমরা রায়ে সন্তুষ্ট।’
নিহত দীপ্তি মাদারীপুর সদর উপজেলার চরনচনা গ্রামের মজিবর ফকিরের মেয়ে এবং বলাইরচর শামসুন্নাহার বালিকা মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/আশফাক