মালয়েশিয়ার মালাক্কা ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টারে আয়োজিত আসরে খাদ্য ও পানীয়, হালাল ফ্যাশন, হালাল ট্যুরিজমসহ মোট ৯টি ক্লাস্টারে ৪০০টি বুথের মাধ্যমে বাংলাদেশ, কোরিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, চীন, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, তাইওয়ান ও মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের ৮টি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। মালাক্কা প্রাদেশিক সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় মালাক্কা ইসলামিক রিলিজিয়ন কাউন্সিল (এমএআইএম) দ্বিতীয়বারের মতো এই মেলার আয়োজন করে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মালাক্কা প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী উতামা এবি রউফ বিন ইউসুহ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজকদের আমন্ত্রণে যোগ দেন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মনজুরুল করিম খান চৌধুরী। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর বিভাগের (ধর্মীয় বিষয়ক) মন্ত্রী সিনেটর সেতিয়া ড. হাজী মোহাম্মদ নাঈম বিন হাজী মোখতার এবং ব্রুনাই দারুসসালাম, ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুরের আঞ্চলিক ধর্মীয় মন্ত্রীদের প্রতিনিধিদলসহ মালাক্কা রাজ্য সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও মালয়েশিয়ার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।
মেলায় বাংলাদেশ হাইকমিশন বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের খাদ্য ও পানীয় পণ্যসামগ্রী প্রদর্শন করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে অন্যান্য স্টলের পাশাপাশি বাংলাদেশের স্টল পরিদর্শন করেন মালাক্কা প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী উতামা এবি রউফ বিন ইউসুহ ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। এ সময় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মনজুরুল করিম খান চৌধুরী ও তার সহধর্মিণী ফারজানা নাসরিন তাদের স্বাগত জানান এবং বাংলাদেশের বুথে প্রদর্শিত রপ্তানিযোগ্য বিভিন্ন পণ্য যেমন তৈরি পোশাক, পাটজাত পণ্য, সিরামিক সামগ্রী, ঔষধসামগ্রী, চামড়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য, খাদ্য ও পানীয় সামগ্রী প্রভৃতি সম্পর্কে অতিথিদের অবহিত করেন। তিনি হালাল বাণিজ্য সম্প্রসারণে মালাক্কার মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন এবং ভবিষ্যতে আরও বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণের আশা ব্যক্ত করেন। পরিদর্শন শেষে মুখ্যমন্ত্রীকে বাংলাদেশি বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী প্রদান করা হয়।
এ সময় অন্যান্য অতিথিবৃন্দের সঙ্গে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) প্রণব কুমার ঘোষ এবং অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের তাওসিফ কবির, বিভাগীয় প্রধান (সাউথ ডিভিশন–মালাক্কা ও জহরবারু), মোহাম্মদ পারভেজ, আঞ্চলিক ম্যানেজার (মালাক্কা ও নেগেরি সেম্বিলান) এবং তারেকুর রহমান আকাশ, মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ উপস্থিত ছিলেন।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে হাইকমিশন বাংলাদেশের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের জন্য কুয়ালালামপুরসহ অন্যান্য প্রদেশে বিভিন্ন বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণসহ নানা পরিকল্পনা নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এই মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাজধানী কুয়ালালামপুরের পাশাপাশি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশেও বাংলাদেশের পণ্যের বাজার তৈরি করা সম্ভব হবে। মালয়েশিয়া তথা আসিয়ান অঞ্চলে বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য ও সেবাকে পরিচিত করার লক্ষ্যে হাইকমিশন নিয়মিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ নিচ্ছে এবং ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ৪টি আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণ করেছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ হাইকমিশনের বুথে রপ্তানিযোগ্য পণ্যসামগ্রীর পাশাপাশি আগামী ডিসেম্বর মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য ‘গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো ২০২৫’ এবং রপ্তানি, বিনিয়োগ ও পর্যটনবিষয়ক প্রকাশনা বিতরণসহ সংশ্লিষ্ট তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যবসায়ী, পরিবেশক ও দর্শনার্থী বাংলাদেশের বুথ পরিদর্শন করেন এবং বাংলাদেশের পণ্যসামগ্রী নিয়ে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
মেলার শেষ দিনে সফলভাবে অংশগ্রহণের জন্য আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হাইকমিশনকে সনদপত্র ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করে।