আমাদের গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ের কেন্দ্রে বহু বছর ধরে দেখা যাচ্ছে এক রহস্যময় গামা রশ্মির (শক্তিশালী বিকিরণ) আলো। ২০০৮ সালে নাসার ফার্মি গামা রে স্পেস টেলিস্কোপ এই আলো শনাক্ত করে। এরপর থেকেই বিজ্ঞানীরা আলোটির উৎস নিয়ে বিভ্রান্ত—এটি কি বিস্ফোরিত নক্ষত্রের অবশিষ্টাংশ (পালসার), না-কি মহাবিশ্বের অদৃশ্য পদার্থ ডার্ক ম্যাটার থেকে আসছে?
ডার্ক ম্যাটার হলো এমন এক অদৃশ্য পদার্থ যা আলো শোষণ বা প্রতিফলন করে না। কিন্তু মহাবিশ্বের প্রায় ৮৫ শতাংশ পদার্থই এটি দিয়ে গঠিত বলে ধারণা।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় নরওয়ের ইউনিভার্সিটি অব অসলোর বিজ্ঞানীরা কম্পিউটার সিমুলেশনে দেখিয়েছেন, ডার্ক ম্যাটারের সংঘর্ষ থেকেই মিল্কিওয়ের কেন্দ্রে পাওয়া এই আলো তৈরি হতে পারে। গবেষক জোসেফ সিল্ক বলেন, এখন প্রায় ৫০ শতাংশ সম্ভাবনা আছে যে আলোটি ডার্ক ম্যাটার থেকেই আসছে।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ডার্ক ম্যাটার হতে পারে এক ধরনের অদৃশ্য কণিকা WIMPs (Weakly Interacting Massive Particles), যা সংঘর্ষে গামা রশ্মি তৈরি করে। ২০২৭ সালে চালু হতে যাওয়া চেরেনকভ টেলিস্কোপ অ্যারে অবজারভেটরি এই রহস্য উদ্ঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি এই আলো সত্যিই ডার্ক ম্যাটার থেকে আসে, তবে এটি হবে মহাবিশ্বের এক যুগান্তকারী আবিষ্কার যা আমাদের অদৃশ্য জগত সম্পর্কে নতুন ধারণা দেবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল