বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পাদক পরিষদের মতবিনিময়ে বলা হয়েছে, সরকার ও জনগণের মধ্যে সংযোগে সেতু হিসেবে ভূমিকা রাখে সংবাদমাধ্যম। দেশের গণমাধ্যমও বর্তমান সংস্কার ও নতুন রাষ্ট্র নির্মাণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে চায়। রাষ্ট্র সংস্কার প্রক্রিয়ায় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অত্যন্ত জরুরি। এ জন্য গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে সব ধরনের মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা বাতিল করা আবশ্যক। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ডেইলি স্টার সেন্টারে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম সভাপতিত্ব করেন। অংশ নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটি ও সমন্বয়ক কমিটির প্রতিনিধিরা। বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম প্রমুখ। সভাটি সঞ্চালনা করেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।
সভায় তথ্য ও যোগাযোগ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বাংলাদেশকে কেন্দ্রে রেখে কীভাবে একটি ইনক্লুসিভ সোসাইটি গঠন করা যায় সে লক্ষ্যে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা কাজ করছেন বলে জানান।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রিন্ট পত্রিকার প্রশংসা করে বলেন, জুলাইয়ের কঠিন দিনগুলোতে যখন টেলিভিশন চ্যানেলগুলোয় সঠিক খবর পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন প্রিন্ট পত্রিকাই ছিল ভরসা।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেন, গণঅভ্যুত্থান ছিল একটি সমন্বিত প্রয়াস। নব্বইয়ে যে একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত হয়েছিল তা ওয়ান-ইলেভেনে ভেঙে যায়। নতুন বাংলাদেশে সবাইকে কীভাবে ধারণ করা যায় সেটাই এখনকার চিন্তার বিষয়।
সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম রাষ্ট্র সংস্কার প্রক্রিয়ায় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অত্যন্ত জরুরি উল্লেখ করে সব ধরনের মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা বাতিলের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে দক্ষ সরকার দৃশ্যমান হওয়া জরুরি। একই সঙ্গে নতুন নেশনের ভিশন স্পষ্ট করতে হবে। সরকার ও জনগণের মধ্যে সংযোগ থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে সেতু হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে সংবাদমাধ্যম। তিনি বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার ও নতুন রাষ্ট্র নির্মাণ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত থাকতে চায়। দেশের রূপান্তরের এ যাত্রায় অংশীদার হতে চায় সম্পাদক পরিষদ। সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী (নাসির আবদুল্লাহ), আকরাম হুসাইন, ভূঁইয়া আসাদুজ্জামান, মামুন আবদুল্লাহিল ও আরিফুল ইসলাম আদীব এবং সমন্বয়কদের মধ্যে সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ ও নাগরিক কমিটির সামান্তা শারমীন উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর, যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান, সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, প্রতিদিনের বাংলাদেশ সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, দেশ রূপান্তর সম্পাদক মোস্তফা মামুন প্রমুখ।