হত্যার জন্য গবাদি পশু কেনাবেচার উপরে কেন্দ্রীয় সরকারের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ভারত জুড়ে যখন তুমুল বিতর্ক, তার মধ্যেই যোগী আদিত্যনাথের সরকার আজ স্পষ্ট করে দিল, তাঁর রাজ্যে গরু-রক্ষার বিষয়টি এখন জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন। গরু হত্যা বা দুধের জন্য পোষা হয় এমন গবাদি পশুর বেআইনি পাচারে ধরা পড়লে উত্তরপ্রদেশে এবার জাতীয় নিরাপত্তা আইন (এনএসএ) ও দুষ্কৃতী আইন (গ্যাংস্টার অ্যাক্ট) প্রয়োগ করা হবে। এদিকে এই নিয়ম কঠোর ভাবে পালন করতে হবে বলে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ-কর্মকর্তার উদ্দেশে এক সতর্কবার্তায় মঙ্গলবার রাজ্য পুলিশের প্রধান (ডিজিপি) সুলখন সিংহ এ তথ্য জানিয়েছেন।
এনএসএ-তে কাউকে ধরা হলে যত দিন খুশি আটক রাখা যায়। আটককৃতকে তার কারণ জানানোরও দায় থাকে না পুলিশের। গরু-রক্ষা যোগীর দ্বিতীয় অস্ত্রটিও কম যায় না। ‘গ্যাংস্টার অ্যাক্টে’ আটক ব্যক্তিকে সাধারণ ক্ষেত্রে ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখা যায়। বিশেষ ক্ষেত্রে এটা ৬০ দিন পর্যন্তও হতে পারে। শুধু তা-ই নয়, এক বার ‘গ্যাংস্টার অ্যাক্ট’-এর ছাপ্পা পড়া মানে পুলিশের দুষ্কৃতী তালিকায় নাম উঠে যাওয়া। পরে যে কোনও সময়ে থানায় হাজিরা দেওয়ার জন্য সমন জারি করা যায় তার বিরুদ্ধে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকলেও যে কোনও সময়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় তলব করতে পারে পুলিশ। অর্থাৎ গরু হত্যা বা গবাদি পশু পাচারের দায়ে এক বার ধরা পড়লে এ বার থেকে সারা জীবনের জন্য দাগি অপরাধী হয়ে থাকতে হবে যোগীর রাজ্যে।
তবে এমন নয় যে, যোগী সরকারই এটা চালু করল। এমন অপরাধে ওই দুই আইন কার্যকর করার নির্দেশ জারি হয়েছিল বিগত অখিলেশ যাদব সরকারের আমলেই। কিন্তু বাস্তবে তা প্রয়োগ করা হতো না সে ভাবে। যোগী সরকার এবার এই দু’টি আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে গরু হত্যা বা গবাদি পশুর পাচার রুখতে বদ্ধপরিকর। এর পাশাপাশি ডিজিপি সুলখনের নির্দেশ, গরু-রক্ষার নামে আইন হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনাও ঠেকাতে হবে।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
বিডি প্রতিদিন/৭ জুন ২০১৭/হিমেল