বিশ্বের বৃহত্তম শিল্পকলা জাদুঘর লুভর মিউজিয়াম ২০১৮ সালে রেকর্ডসংখ্যক ১ কোটি ২ লাখ দর্শনার্থী ঘুরে দেখেছে।ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের সেন নদীর তীরে অবস্থিত প্রায় ৮ লক্ষ বর্গফুটের এ মিউজিয়াম রেকর্ড সংখ্যক দর্শনার্থীর আগমনে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় শিল্পকলা জাদুঘরের খেতাব নিজের দখলে নিয়ে নিল। মোট দর্শনার্থীর মধ্যে বিদেশি পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল প্রায় ৭৫ শতাংশ।
লুভর মিউজিয়ামের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী জিন-লুস মার্টিনেজ দাবি করেন, জাদুঘরের ইতিহাসে এটি প্রথম বারের মতো রেকর্ড।
ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জিন-লুস মার্টিনেজ জানিয়েছেন, জাদুঘরটিতে দর্শনার্থীদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে প্রায় ৬ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার খরচ করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে নতুন টিকিট কাউন্টার, নতুন লাগেজ স্টোররুম ও দলীয় ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য নতুন সুবিধা।
২০১৮ জুনে মার্কিন গায়িকা বিয়ন্সে ও র্যাপার জে-জির নতুন মিউজিক ভিডিও ‘অ্যাপশিট’। এর একটি দৃশ্যে দেখা যায়, লুভরের শিল্পকর্মগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এই তারকা দম্পতি। ভিডিওটি সেখানে যেতে অনেকের মধ্যে কৌতূহল তৈরি করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
জ্বালানির দাম বৃদ্ধিসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক কারণে সরকার বিরোধীদের বিক্ষোভ চলতে থাকায় গত ৮ ডিসেম্বর একদিনের জন্য বন্ধ ছিল লুভর। ওইদিন চালু থাকলে ১ কোটি ২ লাখ থেকে সংখ্যাটা নিঃসন্দেহে আরও বাড়তো।
২০১৫ সালে সন্ত্রাসী হামলার পর প্যারিসের পর্যটনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। ওই ঘটনার পর ভ্রমণপ্রেমীদের সংখ্যা ৩০ শতাংশ কমে যায়।
লুভর পরিচালক বলেন, ‘২০১৭ সালে ৮১ লাখ মানুষ আমাদের জাদুঘর ঘুরেছে। আর এবার রেকর্ড সংখ্যক দর্শনার্থী জানিয়ে দিচ্ছে পর্যটনে আমরা প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে উতরে উঠতে পেরেছি।
বিশ্বের কোন জাদুঘরগুলোতে মানুষ সবচেয়ে বেশি যায়, ২০১৭ সালে ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য আর্ট নিউজপেপারের এক জরিপে সেই তথ্য উঠে আসে। এতে ৮১ লাখ দর্শনার্থীর সুবাদে শীর্ষে ছিল লুভর। তালিকায় দুই থেকে পাঁচ নম্বরে স্থান পায় যথাক্রমে বেইজিংয়ের ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব চায়না (৮০ লাখ), মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্ট ইন নিউ ইয়র্ক (৬৭ লাখ), ভ্যাটিক্যান মিউজিয়ামস (৬৪ লাখ) ও লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়াম (৫৯ লাখ)।
লুভরে লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মোনালিসাসহ অনেক বিখ্যাত শিল্পকর্ম আছে। ১৯৮৯ সাল থেকে বিশেষ ভাবে নির্মিত কাচের পিরামিড দিয়ে দর্শনার্থীদের এই জাদুঘরে ঢুকতে হয়।
১৭৯৩ সালের ১০ আগস্ট ৫৩৭টি চিত্রকর্মের একটি প্রদর্শনীর মাধ্যমে লুভ্র জাদুঘরটি উদ্বোধন করা হয়। এরপর ধীরে ধীরে জাদুঘরটিতে প্রায় ২০ হাজার শিল্পকর্ম যোগ করা হয়। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে অনুদান ও অধিকৃতির মাধ্যমে জাদুঘরের সংগ্রহের আয়তন ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার