মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইন ও চিন প্রদেশে বিমান হামলা চালিয়ে শিশুসহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করে সামরিক বাহিনী। চলতি বছরের মার্চ এবং এপ্রিলে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আল-জাজিরা জানায়, রাখাইন ও চিনে এই হামলার ঘটনায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বৌদ্ধ ধর্মালম্বী রাখাইন বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী দমনে নিরীহ গ্রামবাসীদের ওপর এই হামলা চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, যারা তাতমাদাও হিসেবেও পরিচিত।সেখানে যুদ্ধপরাধের তদন্তের জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানায় অ্যামনেস্টি।
মার্চ ও এপ্রিলের ওই হামলার নতুন কিছু তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে অ্যামনেস্টি। এক প্রতিবেদনে তারা জানায়, চিন প্রদেশের বেশ কয়েকটি গ্রামে বোমা হামলা চালানো হয়, যাতে ১২ জনেরও বেশি বেসামরিক লোক নিহত হয়।
মার্চের মাঝামাঝি পালেতওয়া উপশহরে এক হামলার প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকার নেয় আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। ওই ব্যক্তি জানান, মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর ফেলা বোমায়, তার চাচা, তার ভাই এবং ভাইয়ের ১৬ বছর বয়সী বন্ধু নিহত হয়।
একই এলাকার আরেক পরিবারের দুই ব্যক্তি জানান, বোমা হামলায় সাত বছরের এক শিশুসহ পরিবারটির নয়জন নিহত হন। শিশুটির বাবা অ্যামনেস্টিকে বলেন, আমার পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে।
এপ্রিলে পালেতওয়ায় আরেকটি বিমান হামলায় ৭ জন বেসামরিক লোককে হত্যা করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। প্রত্যক্ষদর্শী এক কৃষক জানান, ওই ঘটনায় আরও ৮ জন আহত হয়।
বৌদ্ধ ধর্মালম্বী রাখাইন জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মি ও তাতমাদাওর মধ্যে সংঘর্ষে হামলার শিকার হয় এসব বেসামরিক লোক। রাখাইন রাজ্যের স্বায়ত্তশাসনের জন্য মিয়ানমার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ছে আরাকান আর্মি।
সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা গোষ্ঠীও এই রাখাইনের বাসিন্দা। ২০১৭ সালে মিয়ানমার বাহিনীর অভিযানের মুখে সাড়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তাদের ওপর গণহত্যা, গণধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত