কিছুতেই কাটছে না ব্রেক্সিট জট। এবার ব্রিটেনের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপের ভাবনা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ)। ব্রাসেলসের অভিযোগ, গত জানুয়ারি মাসে স্বাক্ষরিত ‘ব্রেক্সিট চুক্তি’তে বদল ঘটাতে চাইছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের অবমাননা।
প্রায় বছর তিনেক আগে ব্রিটিশ জনতার মত নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয় ব্রিটেন। সেই প্রক্রিয়ার নামই হচ্ছে ব্রেক্সিট। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি রাত ১১ টায় ‘ব্রেক্সিট’ কার্যকরী করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যায় ব্রিটেন।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টে পাশ হয় ব্রেক্সিট বিল। এই বিচ্ছেদ কার্যকরী করতে বেশ কিছু শর্ত নিয়ে ব্রেক্সিট বিল পাশ হওয়ার আগে EU’র সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেন বরিস জনসন। আন্তর্জাতিক আইন মতে ওই চুক্তির শর্ত মানতে বাধ্য দু’পক্ষই। এমন সময়ে ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে EU’র সঙ্গে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে ব্রিটেনের। পারদ আরও চড়িয়ে এবার একতরফাভাবে ‘ব্রেক্সিট চুক্তি’তে বদল ঘটাতে চাইছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তারপরই রীতিমতো ব্রিটেনের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ করার ভাবনা শুরু করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
এদিকে, জনমতের ভিত্তিতে দীর্ঘ সম্পর্কে ছেদ টানলেও, ইউরোপের অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য থেকে শুরু করে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে চট করে ইতি টানা সম্ভব নয় ব্রিটেনে পক্ষে। কারণ চুক্তি না হলে পণ্য পরিবহণ-সহ একাধিক বিষয়ে দেখা দেবে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা। তাই ব্রেক্সিট কার্যকরী করতে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ট্রানজিশন পিরিয়ডে রয়েছে ব্রিটেন। এহেন পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন দ্রুত চুক্তি সেরে ফেলতে চাইছেন। তাই তিনি হুমকি দিয়ে সাফ জানিয়েছেন আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে এই বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত না হলে আলোচনা প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়াবে ব্রিটেন। এতে যদি ব্রেক্সিট পরবর্তী পরিস্থিতিতে সমস্যা তৈরি হয় তবে তাই সই।
উল্লেখ্য, লন্ডনে ফের EU প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ব্রিটিশ প্রতিনিধি ডেভিড ফ্রস্ট ও মিশেল বার্নিয়ার। অষ্টম দফার এই আলোচনার মূল বিষয় হল, ব্রিটেনে জলসীমায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার অধিকার ও শিল্পে সরকারি ভর্তুকি। বিশ্লেষকদের মতে, রফতানি বাড়াতে দেশীয় শিল্পে সরকারি ব্রিটিশ সরকার যাতে ভর্তুকি না দেয় তা নিশ্চিত করতে চাইছে EU। কারণ, সরকারি ভর্তুকি প্রাপ্ত বাণিজ্যিক সংস্থাগুলোর পক্ষে কম দামে পণ্য জোগান দেওয়া সম্ভব। এমনটা হলে মার খাবে EU’র ২৭টি সদস্য দেশ।
এদিকে, ব্রিটেনও সাফ জানিয়েছে কানাডা বা অস্ট্রেলিয়ার সিংয়ে তাদের যেমন পৃথক বাণিজ্যিক চুক্তি আছে তেমন বাকি দেশের সঙ্গেও হতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত