উপকূলে টহল দেওয়ার জন্য যুদ্ধজাহাজ ও ড্রোন পাঠাচ্ছে ভেনেজুয়েলা।
ভেনেজুয়েলা উপকূলে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে ওয়াশিংটন যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর পর এ পদক্ষেপ নিল কারাকাস।
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্লাদিমির পাদ্রিনো ঘোষণা করেন, ভেনেজুয়েলার ক্যারিবীয় উপকূলে টহলের জন্য একটি বড় ধরনের ড্রোন বহর মোতায়েন করা হবে।
তিনি আরও জানান, দেশের আঞ্চলিক জলসীমার আরও উত্তরে বড় আকারের নৌযানও পাঠানো হচ্ছে।
এর আগে গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন লাতিন আমেরিকার মাদক মোকাবেলায় তিনটি যুদ্ধজাহাজের একটি উভচর স্কোয়াড্রন ভেনেজুয়েলার উপকূলের দিকে পাঠায়।
সোমবার সংবাদ সংস্থাগুলো জানায়, যুক্তরাষ্ট্র আরও দুটি জাহাজ- একটি গাইডেড মিসাইল ক্রুজার ও একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত দ্রুত আক্রমণকারী সাবমেরিন ক্যারিবীয় সাগরে পাঠিয়েছে। মোতায়েনকৃত বাহিনীতে মোট ৪৫০০ মার্কিন সেনা রয়েছে। এর মধ্যে ২২০০ নৌ সেনা সদস্য রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি অভিযোগ করেছে, ভেনেজুয়েলার বামপন্থি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িত এবং কোকেন পাচারে ভূমিকা রেখেছেন। এ অভিযোগের পর ওয়াশিংটন মাদুরোকে গ্রেফতার বা বিচারের মুখোমুখি করার জন্য ঘোষিত পুরস্কার ২৫ মিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৫০ মিলিয়ন ডলার করেছে।
এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিয়োসদাদো কাবেল্লোকে গ্রেফতার বা বিচারের মুখোমুখি করার জন্যও ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, মাদুরো ও তার সরকার ‘কার্টেল দে লস সোলেস’ নামে পরিচিত ভেনেজুয়েলার কোকেন পাচারচক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছে, যাকে ওয়াশিংটন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তবে মাদুরো এ অভিযোগ নাকচ করে বলেছেন, তার দেশে সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার নিজের সাপ্তাহিক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে মাদুরো দাবি করেন, ভেনেজুয়েলা প্রতিবেশী কলম্বিয়ার মতো কোকা ফসল বা কোকেন উৎপাদনমুক্ত দেশ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে নিজেদের দেশের মাদক সেবন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে অন্যদের দোষারোপ করার জন্য অভিযুক্ত করেন। ওয়াশিংটনের হুমকির মুখে তিন লক্ষাধিক স্থানীয় মিলিশিয়া সদস্যকে জাতীয় নিরাপত্তা জোরদারে প্রস্তুত রেখেছেন। পাশাপাশি ভেনেজুয়েলা-কলম্বিয়া সীমান্তে প্রায় ১৫ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে অপরাধী গোষ্ঠীগুলো, বিশেষ করে মাদক কারবারে জড়িতদের নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।
অন্যদিকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পাদ্রিনো জানিয়েছেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চলমান এক অভিযানে এমন কিছু জাহাজঘাট ভেঙে দেওয়া হয়েছে, যেখানে অপরাধীরা আধা ডুবোজাহাজ ও মাদক পরিবহনের বোট বানানোর চেষ্টা করছিল। জাতিসংঘে ভেনেজুয়েলার মিশন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে ‘শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ডের বৃদ্ধি’ ও ‘আঞ্চলিক শান্তি নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি’ বলে নিন্দা জানিয়েছে। ভেনেজুয়েলার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন পাঠানো সরাসরি ভয়ভীতি প্রদর্শনের সমতুল্য। সূত্র: আল-জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/একেএ