ভাঙাচোরা নৌকায় ভূমধ্যসাগরের বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশের শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশিরা। চলতি বছরে অবৈধ পথে ইউরোপে অবৈধ অভিবাসনের হার ২২ শতাংশ কমলেও এ পথ পাড়ি দিয়ে প্রবেশ করেছেন ৫০ হাজার ৮৫০ জন, যা গত বছরের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি। শুধু চলতি মাসে প্রবেশ করেছেন ৮ হাজার ৪৬ জন। এ রুটে ইউরোপে প্রবেশকারীদের অধিকাংশই বাংলাদেশি। সম্প্রতি ইউরোপীয় সীমান্ত ও উপকূলরক্ষী সংস্থা ফ্রনটেক্সের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪০০ জন। এর মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছেন বাংলাদেশ, মিসর ও মরক্কোর নাগরিকরা। তবে কঠোর নজরদারি ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ জোরদার করায় এ বছর ইউরোপে অনিয়মিত অনুপ্রবেশ কমেছে। পশ্চিম আফ্রিকান রুট দিয়ে অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ ৫৮ শতাংশ, পশ্চিম বলকান রুট দিয়ে ৪৭ শতাংশ এবং পূর্ব ইউরোপের স্থলসীমান্ত দিয়ে অবৈধ প্রবেশ ৩৬ শতাংশ কমেছে। তবে মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় সাগরপথে এখনো সবচেয়ে বেশি অভিবাসী ইতালিতে প্রবেশ করে। পুরো ইউরোপে মোট অবৈধ প্রবেশকারীদের প্রায় ৪০ শতাংশই এই রুট দিয়ে প্রবেশ করেছে। এ ছাড়া পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় রুটে অনিয়মিত প্রবেশ বেড়েছে ২৮ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে এ রুটে ইউরোপে প্রবেশ বেড়েছে অর্ধেকেরও বেশি, যার মধ্যে আলজেরিয়া থেকে যাত্রা করা অভিবাসীই প্রায় তিন-চতুর্থাংশ।
এদিকে ফ্রান্স হয়ে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫৪ হাজার ৩০০ জন নাগরিক যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা করেছেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, অবৈধ পথে ইউরোপ প্রবেশের সংখ্যা কিছুটা কমলেও মানবিক সংকট এখনো গভীর। এ বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে কমপক্ষে ১ হাজার ২৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা প্রমাণ করে, সহজে ইউরোপ প্রবেশের জন্য মানুষ এখনো জীবনের ঝুঁকি নিতেও দ্বিধা করছে না।