ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ১০ লেনে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে সরকার। ভূমিসংকট ও টেকসই যোগাযোগব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে রেলপথ উন্নয়নের দিকে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে সড়কের ওপর চাপ কমবে এবং রেল পরিবহন খাতে নতুন গতি আসবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মহাসড়কটি রাজধানীকে চট্টগ্রাম ও টেকনাফ পর্যন্ত যুক্ত করেছে। তবে মহাসড়ক দীর্ঘদিন ধরে যানজট ও খারাপ সড়ক ব্যবস্থাপনায় ভুগছে। এ থেকে মুক্তি পেতে ১০ লেনের প্রকল্প হাতে নিয়েছিল সরকার। তবে প্রধান উপদেষ্টার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেল মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী শেখ মঈনুদ্দিন গণমাধ্যমে বলেছেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ১০ লেনে উন্নীত করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সর্বোচ্চ ছয় লেন পর্যন্ত সম্প্রসারণ হতে পারে। এর বাইরে রেল যোগাযোগে জোর দেওয়া জরুরি।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে মহাসড়কটিতে দিনে ৩৫ হাজার ৪৮২টি যানবাহন চলাচল করত, যা ২০২৪ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার ৫০১টিতে। হাইওয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, অতিরিক্ত বোঝাই যানবাহন সড়কের মারাত্মক ক্ষতি করছে। সরকারকে প্রতি বছর প্রায় ৮৬১ কোটি টাকা মেরামতে ব্যয় করতে হচ্ছে। চৌদ্দগ্রাম থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত ১০৫ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা ভয়াবহ।
শেখ মঈনুদ্দিন আরও বলেন, রেলপথ আধুনিকায়ন হলে মানুষ সড়ক থেকে রেলের দিকে ঝুঁকবে। তাই রেলপথ উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ সংস্কার ও আধুনিকায়নের কাজ চলছে। অনেক দেশে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পণ্য রেলপথে পরিবহন হয়, অথচ বাংলাদেশে ২ শতাংশ। অন্তত ২৫ শতাংশে উন্নীত করতে চাই। এতে রেল পরিবহন লাভজনক হবে এবং সড়কে যানজটও কমবে।
রেলওয়ের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে তিনি জানান, আমাদের এখনো পর্যাপ্ত লোকোমোটিভ নেই। ইতোমধ্যে নতুন লোকোমোটিভ সংগ্রহের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এ ছাড়া পণ্য পরিবহনের জন্য নির্দিষ্ট ট্রেন চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এই রুট দিয়ে সম্পন্ন হয়। তাই ঢাকা-ট্টগ্রাম মহাসড়কের উন্নয়ন অবহেলা করলে অর্থনীতিতে বড় প্রভাব পড়তে পারে।