শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

ঘর গোছাতে ব্যস্ত ইসলামী দলগুলো

ঘর গোছাচ্ছে ইসলামী দলগুলো। জাতীয় ও রাজনৈতিক ইস্যুতে এসব দলের প্রকাশ্য তৎপরতা বর্তমানে নেই বললেই চলে। তবে মিডিয়ায় প্রায়ই ঘরোয়া পরিবেশে সভা-সমাবেশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠাচ্ছে। অধিকাংশ দলের দাবি, মামলা-হামলার ভয়েই মূলত রাজপথে ইসলামী দলগুলোর তৎপরতা কমে গেছে। তবে সময়মতো এসব দল ও সংগঠন আবারও মাঠে নামবে। দলের দায়িত্বশীলরা বলছেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন তারা। এখন সংগঠনকে শক্তিশালী করছেন। সময়-সুযোগ মতো রাজপথেও নামবেন।
দেশে ধর্মভিত্তিক দল ও সংগঠন কতগুলো আছে তার কোনো পরিসংখ্যান নেই। নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের ১২টি ইসলামী দল। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট সরকারে রয়েছে বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন। আর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ।
জামায়াতে ইসলামী : জামায়াত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল। নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন ইতিমধ্যে বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। আপিল বিভাগে বিষয়টি নিষ্পত্তির অপেক্ষায়। শীর্ষ থেকে তৃণমূলের প্রায় সব নেতা-কর্মী মামলায় জর্জরিত। প্রকাশ্যে বের হতে পারে না। সবাই আত্মগোপনে। সারা দেশে কার্যালয় বন্ধ। তবে অত্যন্ত গোপনে এ দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে। বিশেষ করে ছয় মাস ধরে অভ্যন্তরীণ জোর তৎপরতার মাধ্যমে দলের নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে হচ্ছে মাঠে সরব দলটি। নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগরীর এক নেতা বলেন, সরকার আমাদের মাঠে নামতে দিচ্ছে। আমরা সংগঠনকে শক্তিশালী করছি। সময়মতো রাজপথে নামব।
ইসলামী আন্দোলন : সংগঠন শক্তিশালীকরণে জোর দিচ্ছেন চরমোনাই পীর। প্রধান দুই জোটের বাইরে ধর্মীয় অন্যতম শক্তিশালী দল মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি তারা। বর্তমানে চরমোনাই পীর ও তার দলের নেতা-কর্মীরা বর্তমান সংসদ ভেঙে প্রতিনিয়ত নতুন নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার দাবি জানাচ্ছেন। পাশাপাশি সংগঠনকে শক্তিশালী করতে কাজ করে যাচ্ছেন। এ জন্য সারা দেশে তৃণমূলের ভিত মজবুত, জানবাজ কর্মী তৈরি করতে কর্মশালা ও সাংগঠনিক তালিম চালিয়ে যাচ্ছেন।
তরিকত ফেডারেশন : জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের জন্য আইনি এবং রাজপথে লড়াই করে যাচ্ছে নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর নেতৃত্বাধীন তরীকত ফেডারেশন। জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে তরীকতের দায়ের করা মামলায়। সংগঠনের মহাসচিব এম এ আউয়াল এমপি বলেন, সরকার জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধে গাফিলতি করছে। জামায়াত-শিবির সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদী দল। দলটি নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
ইসলামী ঐক্যজোট : মুফতি আমিনীর সময় ইসলামী ঐক্যজোট রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত থাকলেও তার মৃত্যুর পর দলটির তেমন তৎপরতা নেই। ২০ দলীয় জোটের শরিক এ দলের কার্যক্রম অনেকটাই লালবাগ মাদ্রাসার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। তবে জোটের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ জোরদারের পাশাপাশি সারা দেশে দলীয় কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে চলছে বলে জানিয়েছেন দলটির নায়েবে আমির মাওলানা হাসনাত আমিনি।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম : ২০ দলীয় জোটের আরেক শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম দল গোছাতে ব্যস্ত। কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ওয়ালী উল্লাহ আরমান জানান, জমিয়ত রাজনৈতিক শক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে। আগামী তিন মাসজুড়ে নতুন কমিটি নবায়ন করা হবে। জানুয়ারিতে জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া জোটের কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ অব্যাহত আছে।
খেলাফত মজলিস : মাওলানা ইসহাকের নেতৃত্বাধীন খেলাফত মজলিসও ২০ দলীয় জোটের শরিক দল। রাজপথের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। প্রশাসনের বাধার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, দলের আমির মাওলানা ইসহাকের নেতৃত্বে একটি নির্বাচনী বোর্ড রয়েছে। সারা দেশে তারা দলীয়ভাবে ৩০টি আসন চিহ্নিত করছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর