ঢাকার খালগুলো এখন স্থানীয় প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসীনদের কব্জায়। তারা রীতিমতো খালগুলোকে ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত করে সেখানে বিভিন্ন ব্যবসা কেন্দ্র বসিয়েছেন। এই দখলদারদের ২০০ জনের বেশি একটি তালিকা তৈরি করেছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। তালিকা তৈরির প্রায় আট মাস পরও দু-একটি ছাড়া বেশিরভাগই এখনো বেদখলে রয়ে গেছে। সরকারি এসব খালে অবৈধ দখলদারদের নিয়ে তৈরি করা জেলা প্রশাসনের তালিকার একটি কপি বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছেও আছে। তবে তালিকা তৈরির পরই তা ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনেও পাঠানো হয়। ঢাকা ও আশপাশের খালগুলো অবৈধ দখলের কারণে বৃষ্টি হলেই রাজধানীর পথঘাট তলিয়ে ভয়াবহ অবস্থা হয়ে যায়। কাদাপানি-ময়লা-আবর্জনায় তখন নাকানি-চুবানি খায় নগরবাসী। কিন্তু সমাধান আর হয় না। বর্ষাতে রাজধানীর দৈন্যদশায় এখন নড়েচড়ে বসেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তারা। তবে এখনো জেলা প্রশাসনের তৈরি করা অবৈধ দখলদারদের তালিকা নিয়ে কাজ শুরু হয়নি। জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনাররা (ভূমি) জানান, অবৈধ দখলদাররা স্থানীয় প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক হওয়ায় তাদের কাছ থেকে খাল পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয় না। চলতি বছরের গত ১৮ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. শহীদুল ইসলামের স্বাক্ষরে সরকারি খাল অবৈধ দখলমুক্ত করতে একটি তালিকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে পাঠানো হয়। একই ধরনের আরেকটি তালিকা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনেও পাঠানো হয় বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, তৈরি করা তালিকাটি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। তাছাড়া খালগুলোর মালিক জেলা প্রশাসন। তাদেরই উচিত হবে সেগুলো উদ্ধার করে সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা। যদি তারা না পারে তাহলে স্থানীয় সরকার ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে এমন ক্ষমতা দিতে হবে যাতে সিটি করপোরেশন এককভাবে অবৈধ উচ্ছেদ করতে পারে। এক্ষেত্রে আইন সমানভাবে প্রয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে ক্ষমতার পরিবর্তনে আরেক সরকারের ছত্রছায়ায় অন্য কেউ আবারও খাল দখল করবে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম বলেন, জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন উভয়ের নিজস্ব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আছেন। এ দুই সংস্থা যদি চায় তাহলে পুলিশের সহায়তা নিয়ে যে কোনো সময় খাল উদ্ধারে অভিযান চালাতে পারবে। তালিকা থেকে জানা যায়, ১৫৪ জন অবৈধ দখলদার নন্দিপাড়া-ত্রিমোহনী খালটির এক পাশ ভরাট করে মুদি দোকান, দলীয় ও সমিতির কার্যালয়, ফার্মেসি, গ্যারেজ, চায়ের ও কাপড়ের দোকান বসিয়েছেন। ঘোপদক্ষিণ খালেরও এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই। সেই স্থানে বর্তমানে লতিফ বাওয়ানী জুট মিলস অবস্থিত। শাহবাগ থেকে বেগুনবাড়ী খালের সঙ্গে সংযোগ থাকা পরিবাগ খালটি এখন কালভার্ট হিসেবে আছে। ধানমন্ডি সার্কেলে রামচন্দ্রপুরের বিভিন্ন খাল দখলে রেখেছে নবীনগর হাউজিংয়ের আমিন উদ দৌলা, সিরাজ উদ দৌলা, রাজধানী উদ্যানের পক্ষে ইউসুফ সিকদার ও আবদুল রশিদ সিকদার। রায়েরবাজার সুলতানগঞ্জে খালের অবৈধ দখলদাররা হলেন— আবদুল মালেক, জাহাঙ্গীর, খাইরুল ইসলাম, আলামিন, কালাম মোল্লা, ফারুক, ছালাম মোল্লা, স্বপন, মুরাদ আহম্মেদ, ওমর ফারুক মিয়া, নুর হোসেন, হুসাইন আহম্মেদ, আবুল কালাম, মোসলেম উদ্দিন পাটোয়ারী, শাহ আলম, বাবু, কদম আলী মৃধা, হারুন দেওয়ান, আ. মান্নান, আবুল কালাম, ডা. ফয়েজ, তানহা ভিলা, মনির খান, জেবুন্নেসা, শামীম খান ও নেওয়াজ হোসেন। কোতোয়ালি সার্কেলে থাকা ধোলাইখালটি এখন সড়ক ও বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা। কেরানীগঞ্জে শুভেড্ডা খালের অবৈধ দখলদাররা হলেন আসাদ মিয়া, আলাউদ্দিন, আমীর, জলিল, জহির, সাহা, হানিফ মিয়া, মোতালেব হোসেন, সিহাব, ইদ্রিস বেপারী, হাজী আবুল কাশেম, সেন্টু হাজী, জসিম উদ্দিন, মিন্টু, ইনু হাজী, তোফাজ্জল হোসেন, ছোহরাব, রাজু, আওলাদ মিয়া, আয়নাল, ফারুক, আবদুল মজিদ, আবদুল ছালাম, নুরু মিয়া, আ. বারেক, লাল বানু, চিনি বেগম, রমজান মেম্বার, অভি মিয়া, কানা রবি মিয়া, মোহাম্মদ আলী, সোহেল, আ. ছাত্তার, মিজান, ইয়াদ আলী, জুম্মন মিয়া, সেলিম, আসাদ মিয়া ও আবদুর রাজ্জাক। লালবাগ সার্কেলের কামরাঙ্গীরচর খালের অবৈধ দখলদাররা হলেন— কামাল উদ্দিন, মোসলেম উদ্দিন, ইসমাঈল, কামাল মেম্বার, পান্না ব্যাটারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমান মিয়া ও তাইজ উদ্দিন। কালুনগর খালের অবৈধ দখলদাররা হলেন— রফিক রানা, হাজী মিলন, রুহুল আমিন, মো. জোয়ার্দ্দার, নুরু মিয়া, রোকন, আবুল মিয়া, সবুজ মিয়া, আবদুল খালেক, তাসলিমা খাতুন, আবুল বাসার বশির, মো. মাছুম, সেলিম মিয়া, পলি বেগম, আবদুল ছামাদ, মজিবর রহমান মজু, কে এম সিদ্দিক আলী, আলম সরকার, ইকবাল, আনোয়ার হোসেন আনু, শরীফ, রনি মিয়া, স্বপন, জনি, আলী হোসেন এবং ইঞ্জিনিয়ার মো. শহিদুল্লাহ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে মিরপুরের সাংবাদিক খাল ও বাইশটেকি খাল। এ দুটি খালের সঙ্গে যুক্ত প্যারিস খালের দুই পাশ ভরাট করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। কালশী স্টিল ব্রিজের নিচ দিয়ে যাওয়া বাউনিয়া খালের অধিকাংশই অবৈধভাবে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। মহাখালী খাল, নাখালপাড়া খালও অবৈধ দখলে এখন সংকুচিত। মিরপুর মাজার রোডের খ খাল, শেওড়াপাড়া পীরেরবাগের ঘ খালটিও আবর্জনায় ভরাট হয়ে গেছে।
শিরোনাম
- আমিরাতকে হারিয়ে শেষ চারে ভারতের সঙ্গী পাকিস্তান
- গাজা নগরীতে দুই দিনে দেড় শতাধিক হামলা ইসরায়েলের
- গাজাবাসীকে ফের জোরপূর্বক উচ্ছেদের নিন্দায় পোপ
- স্বর্ণের দাম কমেছে
- ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের
- ছাত্র সংসদ আর জাতীয় নির্বাচন এক নয় : টুকু
- যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র কেনা বন্ধ করলো কলম্বিয়া
- রেমিট্যান্স প্রবাহে ২৮.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি
- বিশ্ব বাণিজ্যে রূপান্তর ঘটাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা
- আবারও রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল
- দুর্গাপূজা ঘিরে স্বৈরাচারের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে : তারেক রহমান
- র্যাংকিংয়েও আফগানদের টপকে গেল টাইগাররা
- ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে পাঁচজনের মৃত্যু
- ‘পিআর ইস্যুতে আলোচনার টেবিল রেখে রাজপথে যাওয়া স্ববিরোধিতা’
- শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের কেউ ভোট দিতে পারবেন না
- ভাঙ্গা থানায় ভাঙচুরের ঘটনায় নিক্সন চৌধুরীসহ ২৯ জনের নামে মামলা
- ‘অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল ২৫-৩’ এ উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ অনুশীলন
- ‘পিআর পদ্ধতির দাবি জনগণের প্রত্যাশার প্রতি মুনাফেকি’
- ফেব্রুয়ারিতেই স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর নির্বাচন হবে : প্রধান উপদেষ্টা
- দুর্গাপূজায় কোনো ধরনের হুমকি নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা