রবিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

সেই মাদক আখড়ার স্থানে হচ্ছে মসজিদ মাদ্রাসা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরের মাদক আখড়া হিসেবে পরিচিত বরিশাল কলোনিতে গড়ে উঠছে সামাজিক, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এসব সংগঠন ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকে বিতরণ করা হবে জ্ঞানের আলো— এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। নগরের সদরঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, ‘বরিশাল কলোনিতে এখন আর মাদক বিক্রি হয় না। পুলিশের টানা অভিযানে পালিয়েছেন মাদক ব্যবসায়ীরা। এ কলোনিতে এখন থেকে মাদকের পরিবর্তে জ্ঞান বিতরণ হবে। তাই স্থাপন করা হচ্ছে ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান।’ বরিশাল রেলওয়ে কলোনি সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতি জহির উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বরিশাল কলোনি থেকে একসময় নগরের মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রিত হতো। সেই চিত্র পাল্টে গেছে। এলাকাবাসীর সহায়তায় পুলিশের একের পর এক অভিযানে পালিয়েছেন মাদক ব্যবসায়ীরা। সেখানে এখন মাদ্রাসা তৈরির কাজ চলছে। এ ছাড়া এলাকাবাসীর উদ্যোগে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে।’ জানা যায়, তিন দশক আগে নগরের সদরঘাটের বরিশাল কলোনিতে গড়ে ওঠে মাদকের আখড়া। পরে তা নগরের অন্যতম মাদক আখড়ায় পরিণত হয়। এই কলোনি থেকেই নগরের সিংহভাগ মাদক সরবরাহ হতো। আলোচিত এ মাদক আখড়া নিয়ন্ত্রণ করত মাদকের ১০ গডফাদার। তাদের অধীনে ছিল ২ শতাধিক ‘মাদককর্মী’। বরিশাল কলোনির ভিতরে মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে ছোট ছোট যেসব সপট ছিল সেগুলোকে ‘গিরা’ বলা হতো। কলোনির ভিতরে মালী কলোনির ৮ নম্বর ব্লকে টিটির গিরা নামে একটি স্পট আছে যা মাদক ব্যবসায়ীদের অফিসকক্ষ হিসেবে ব্যবহূত হতো। এ ছাড়া নাজমার গিরা, স্বপন বড়ুয়ার গিরা, ডান্ডির গিরা, হালিম সাহেবের গিরা নামে আরও কয়েকটি স্পট ছিল। এসব গিরার অনেকটায় খোলামেলাভাবেই ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা ও হেরোইন বিক্রি হতো। এ বছরের শুরুতে এই মাদক আখড়া উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর পর থেকে একের পর এক অভিযান চালানো হয়। গত নয় মাসে দেড় শতাধিক অভিযানে ভেঙে পড়ে আখড়ার চেইন অব কমান্ড। গ্রেফতার করা হয় শতাধিক মাদক ব্যবসায়ীকে। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন কয়েক ব্যবসায়ী। এই মাদক আখড়ায় সবচেয়ে বড় স্পটে ১৪ সেপ্টেম্বর স্থাপন করা হয় একটি মাদ্রাসা ও এতিমখানার ভিত্তিপ্রস্তর। একই সঙ্গে অন্যান্য গিরায় স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কয়েকটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। উচ্ছেদ হওয়া আখড়া ফের কেউ যেন প্রতিষ্ঠা করতে না পারে সেজন্য ওই এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে পুলিশ বিট। একইসঙ্গে জোরদার করা হয়েছে টহল।

সর্বশেষ খবর