মঙ্গলবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিএনপি পাশে না থাকলেও মাঠ ছাড়বে না জামায়াত

স্বতন্ত্র নির্বাচন করার প্রস্তুতি

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

২০-দলীয় জোটের প্রধান শরিক বিএনপি পাশে না থাকলেও আলাদাভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে জামায়াতে ইসলামী। এক্ষেত্রে দলটি শতাধিক আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দিতে পারে। নিবন্ধন না থাকায় দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই জামায়াতের।

জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। আমরা বিশ্বাস করি, জামায়াতের সম্পর্ক দুর্বল হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত বিএনপি নেবে না। তিনি বলেন, জামায়াতের নির্বাচনী প্রস্তুতি রয়েছে। নিবন্ধনের বিষয়টি এখনো উচ্চ আদালতে বিবেচনাধীন। জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, জামায়াতের দিক থেকে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্কের কোনো অবনতি হবে না। আমাদের সঙ্গে যদি কোনো দল জোটগত সম্পর্ক না রাখে তাহলে আমরা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে আমাদের মতো করে প্রার্থী দেব। জানা গেছে, বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ কয়েকটি দল ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বৃহত্তর ঐক্য গড়তে ঐক্য প্রক্রিয়ায় যোগ দেবে। আর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট এতে যোগ দিলে জামায়াতকে ছেড়ে আসতে হবে। জামায়াতের দুজন দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির সঙ্গে জোট করে ভোট করলে জামায়াতের প্রস্তুতি একরকম, আর বিএনপি তাদের পাশে না থাকলে নির্বাচনী কৌশল হবে অন্যরকম। জামায়াত নিজ নামে ও দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রার্থী দিতে হবে। তারা সে পথেই এগোচ্ছে। উচ্চ আদালতের রায়ে নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা হলেও গোপনে জামায়াতের সাংগঠনিক কাজ পুরোপুরি চালু আছে। এর মধ্যেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে ভিতরে  ভিতরে। দলীয় সূত্র জানায়, নির্বাচন সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীদের এলাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম বাড়ানোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী দলের দায়িত্বশীল নেতারাও জেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক সফর করছেন। দলের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান, নির্বাহী পরিষদের সদস্য হামিদুর রহমান আজাদ, রফিকুল ইসলাম খান, মিয়া গোলাম পরোয়ার, শামসুল ইসলাম, আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। জানা গেছে, এবার ২০-দলীয় জোটের মনোনয়ন পেতে জামায়াত বিএনপির কাছে ৫০টির মতো আসন চাইবে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন ৩০টি আসন পর্যন্ত মেনে নেবে তারা। এর কম হলে বা বিএনপি তাদের পাশে না থাকলে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের একটি বড় অংশ এককভাবে নির্বাচন করার পক্ষে। এক্ষেত্রে তারা শতাধিক আসনে প্রার্থী দেবে। সে অনুযায়ী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে ইতিমধ্যে মাঠপর্যায়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি জোটগত বা একক যে কায়দায়ই নির্বাচনে যাক, কারও নির্বাচনী প্রতীক ব্যবহার না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত। দলের দায়িত্বশীল একাধিক নেতা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন না থাকায় তাদের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন। জামায়াত মনে করে, প্রার্থিতার ব্যাপারে তাদের অবস্থান ২০০৮ সালের নির্বাচনের চেয়ে ভালো। জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে জামায়াত ফাঁসিতে মৃত্যু হওয়া ও দণ্ডিত নেতাদের ছেলে বা পরিবারের কাউকে কাউকে প্রার্থী করতে চাইছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর