বুধবার, ৮ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

জাতীয় পার্টির একগুচ্ছ পরিকল্পনা

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

জাতীয় পার্টিকে সক্রিয় করতে নানা পরিকল্পনা নিচ্ছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের। দলে সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চান তিনি। এ লক্ষ্যে তিনি একগুচ্ছ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন।

পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, পার্টির কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করা। তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরি করে দলকে শক্তিশালী করা। এ ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলায় সম্মেলন, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে সক্রিয় করা, নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে দলকে ঢেলে সাজানো এবং গণমুখী কর্মসূচি   দিয়ে সংসদ ও রাজপথে সরব থাকা। জানতে চাইলে জি এম কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এইচ এম এরশাদ যতদিন বেঁচে আছেন তার নির্দেশনা অনুযায়ীই পার্টি চলবে। কাউন্সিল আয়োজন করাটাই এখন আমাদের মূল কাজ। তিনি বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দলকে আরও শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ করতে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করব। গত শনিবার রাতে দলটির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা এইচ এম এরশাদ সংবাদ সম্মেলন করে জি এম কাদেরের হাতে জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব অর্পণ করেন। দলটির বেশিরভাগ নেতা-কর্মী এরশাদের এ সিদ্ধান্তে খুশি। তাদের মতে, পার্টি চেয়ারম্যানের অসুস্থতার কারণে দলের সাংগঠনিক কর্মকা  অনেকটা থেমে ছিল। বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদও অনেকটা অসুস্থ। এ অবস্থায় দলের ঐক্য বজায় রাখার পাশাপাশি জাতীয় পার্টিকে এগিয়ে নিতে জি এম কাদেরই শেষ ভরসা। তাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়ে এরশাদ ঠিক কাজটিই করেছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই তিনি বিবৃতি দিয়ে জানান, ছোট ভাই জি এম কাদেরই তার রাজনৈতিক উত্তরসূরি। সম্প্রতি জি এম কাদেরকে কো- চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে নেতা-কর্মীরা মেনে নিতে পারেননি। তাদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ এবং দাবির মুখে জি এম কাদেরকে ৪ মে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান পদে পুনর্বহাল করেন এরশাদ। নেতা-কর্মীরা মনে করেন, জি এম কাদেরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করায় জাতীয় পার্টিতে যে স্থবিরতা চলছে তা কেটে যাবে। পাশাপাশি দলটি নতুন করে ঘুরে দাঁড়াবে। এ প্রসঙ্গে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এ টি ইউ তাজ রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এইচ এম এরশাদ অতীতে যত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আমরা মেনে নিয়েছি। এখনো যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাও আমরা মানতে বাধ্য। আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন বলেন, জি এম কাদেরকে সফল রাজনীতিবিদ বলছি এ কারণে যে সবার কাছে তার একটা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। মন্ত্রী থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে কোনো অনিয়মের অভিযোগ ওঠেনি। দলের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষের তার প্রতি একটা আস্থা ও সমর্থন রয়েছে। এদিকে নতুন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই জি এম কাদের প্রায় প্রতিদিন বনানীর কার্যালয়ে সময় দিচ্ছেন। নেতা-কর্মীরা বলছেন, দলের দুঃসময়ে এরশাদ জেলে গেলে কাদের চাকরি  থেকে অব্যাহতি নিয়ে নেতা-কর্মীদের ছায়া হয়ে পাশে এসে দাঁড়ান। পরে শেখ হাসিনার মহাজোট আমলে মন্ত্রী হয়েও তিনি অতি সাধারণ জীবনযাপন করেছেন। সামগ্রিক প্রসঙ্গে পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, যারা জাতীয় পার্টি করবেন তাদের সবাইকেই এইচ এম এরশাদের নির্দেশনা মানতে হবে। আমরা দলকে কখনই ছোট করতে চাই না, কাউকে বাদ দিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। আমরা সবাইকে নিয়ে জাতীয় পার্টিকে আরও শক্তিশালী করতে কাজ করব।

 

সর্বশেষ খবর