রবিবার, ১৯ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা
দুই দলের রাজনীতি এখন

উপজেলার শেষ ধাপে বিদ্রোহীদের নিয়ে কড়াকড়ি আওয়ামী লীগে

রফিকুল ইসলাম রনি

উপজেলার শেষ ধাপে বিদ্রোহীদের নিয়ে কড়াকড়ি আওয়ামী লীগে

শেষ ধাপের উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে কড়াকড়ি অবস্থান নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। গত চার ধাপ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে শিথিলতা দেখিয়েছিল ক্ষমতাসীন দলটি। কিন্তু এই শিথিলতায় কিছু এলাকায় নৌকাবিরোধী অবস্থান নেন দলীয় এমপি-মন্ত্রী ও জেলার শীর্ষ নেতারা। ফলে নৌকার ভরাডুবি হয়। সে কারণে এবার আগে থেকেই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের ইন্ধনদাতা এমপি-মন্ত্রী, নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আজ গণভবনে বসছে দলের সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা। জানা গেছে, পঞ্চম ধাপে ১৮ জুন ১৬ উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২১ মে, যাচাই-বাছাই ২৩ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৩০ মে। পঞ্চম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত হবে আজ। দলীয় সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্থী নির্ধারণে গুরুত্ব পাবে প্রার্থীর জনপ্রিয়তা। খতিয়ে দেখা হবে প্রার্থীর পরিবারের রাজনৈতিক ইতিহাস। দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মাঝে প্রার্থীর অবস্থানও মূল্যায়ন করা হবে বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘রবিবার দলের সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভায় বগুড়া-৪ সংসদীয় আসনে এবং উপজেলায় দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। এতে প্রার্থীর জনপ্রিয়তা ও পারিবারিক গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনায় রাখা হবে।’ উপজেলায় শেষ ধাপে বিদ্রোহী প্রার্থী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে এবার যারাই নৌকার বিরোধী প্রার্থী হবেন কিংবা যারাই তাদের ইন্ধন জোগাবেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এবার কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পদ তথা প্রাথমিক সদস্য পদও বাতিল করা হবে।’ ইসি সূত্রমতে, এবার শেষ ধাপে যেসব উপজেলায় ভোট গ্রহণ করা হবে, সেগুলো হচ্ছে- শেরপুরের নকলা, নাটোরের নলডাঙ্গা, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী, বরগুনার তালতলী, নারায়ণগঞ্জ বন্দর, গাজীপুর সদর, রাজবাড়ীর কালুখালী, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ, মাদারীপুর সদর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর ও বিজয়নগর, কুমিল্লার আদর্শ সদর ও সদর দক্ষিণ এবং নোয়াখালী সদর উপজেলা।  তথ্যমতে, নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। প্রতিনিয়ত প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন এসব প্রার্থী। এ ছাড়া দলীয় প্রতীক নৌকার প্রার্থিতা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। দলীয় সূত্রমতে, এবার নির্বাচনকে বিতর্কের বাইরে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে কোনো রকম অরাজকতা বরদাস্ত করবে না কেন্দ্র। গ্রহণযোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন দিতে কোনো ছাড় দেবে না দল। প্রার্থী  মনোনয়নে দলের প্রতি ত্যাগ, রাজনৈতিক ইতিহাস ও তৃণমূলে জনপ্রিয়তা প্রাধান্য দেওয়া হবে বলে একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা নিশ্চিত করেছেন। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছি। এ জন্য কোনো ধরনের অরাজকতা বরদাস্ত করা হবে না। আবার ব্যক্তির বিরোধিতা করতে গিয়ে নিজ দলের ব্যক্তিদের দ্বারা নৌকার বিরোধিতাও মেনে নেওয়া হবে না। যারাই নৌকার বিরোধিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর