শিরোনাম
সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

লাউডগা সাপ

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

লাউডগা সাপ

লাউডগা সাপ। দেখতে অনেকটা লাউ গাছের ডাঁটার মতোই। লিকলিকে চিকন শরীর, গায়ের রং সবুজ। যেন লাউ গাছের কচি ডগা। আর এজন্যই এ সাপের নাম দেওয়া হয়েছে লাউডগা। এদের ইংরেজি নাম common vine snake. আর বৈজ্ঞানিক নাম Ahaetulla nasuta. এরা কলুব্রিডি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। আমাদের দেশের সব এলাকায়ই এ সাপের দেখা মেলে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, চীন, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমারে এদের পাওয়া যায়। সম্প্রতি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে এ সাপের ছবি তুলেছেন বন্যপ্রাণী গবেষক ও আলোকচিত্রী আদনান আজাদ আসিফ। বিশেষজ্ঞরা জানান, লাউডগা সাপের দেহ সবুজ রঙের মসৃণ আঁশ দিয়ে ঢাকা থাকে। পিঠের আঁশগুলো তির্যকভাবে একটার সঙ্গে আরেকটা সজ্জিত থাকে। দেহের নিচের অংশ হালকা হলদে বা সাদাটে রঙের। মাথা লম্বা ও চ্যাপ্টা। মুখ লম্বাটে।

 এদের চোখ ডিম্বাকার, মণি আনূভূমিক। লেজ লম্বা, পাতলা এবং শেষাংশ সুচাল। লাউডগা সাপকে গ্রাম্য এলাকা, পাহাড়ি জঙ্গল, মিশ্র চিরসবুজ বনে পাওয়া যায়। এরা দিনের বেলায় শিকারের খোঁজে বের হয়। গিরগিটি, কাঠবিড়ালি, পাখি, পাখির ডিম ও বাচ্চা খায়। এরা গাছে গাছেই বেশি চলাফেরা করে। এদের পানিতে দেখা মানে বিরল ঘটনা। এরা শান্ত ও লাজুক প্রকৃতির সাপ। সহজে আক্রমণ করে না। ভয় পেলে শরীরের সামনের অংশ চক্রাকারে বাঁকিয়ে ফেলে এবং শরীর ফোলাতে থাকে; তখন আকারে এদের অনেক বড় দেখায়। এদের দৈর্ঘ্য ১৯৭ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। বন্যপ্রাণী গবেষক আদনান আজাদ আসিফ বলেন, ‘লাউডগা সাপ লাউ গাছের ডগায় পেঁচিয়ে থাকলে বোঝারই উপায় থাকবে না যে, এখানে সাপ আছে। আগে আমাদের দেশে এ সাপ অনেক বেশি দেখা যেত। এখন কমে গেছে। প্রতিনিয়ত এদের বাসস্থলগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এবং এরা মানুষের হাতে মারাও যাচ্ছে। অথচ বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। আমাদের প্রকৃতির খাদ্যশৃঙ্খলের উপাদান হিসেবে এদের প্রকৃতিতে টিকে থাকা অত্যন্ত জরুরি।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর