বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি

অর্থ আসছে কুঁচিয়ায়

এম আবু সিদ্দিক, চরফ্যাশন

অর্থ আসছে কুঁচিয়ায়

ভোলার চরফ্যাশন দক্ষিণ আইচা চর হরিশে ১০ পরিবার শুরু করেছে কুচিয়া চাষ। ময়মনসিংহ থেকে পোনা এনে ১০টি খামারে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু চাষিদের। চরফ্যাশনে পল্লী উন্নয়ন সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর আর্থিক সহায়তায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) পাঁচ মাস পূর্বে কুচিয়া চাষ প্রকল্পটি শুরু করে। এরই মধ্যে চরফ্যাশনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে কুচিয়া চাষ। কুচিয়া চাষের জন্য চর হরিশকে কুচিয়া পল্লী নামে নতুন রূপ নিয়েছে। উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনের রক্ষিত বন্য প্রাণীর তালিকায় এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। আমাদের দেশের নিম্ন আয়ের মানুষ জীবিকা নির্বাহের মাধ্যমরূপে কুচিয়া চাষ বেছে নিয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য মতে, গত অর্থ বছরে ৭০.০১৭৫ টন কুচিয়া রপ্তানি করে প্রায় ১.৫ কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেছে বাংলাদেশ। তাইওয়ান, হংকং, চীন, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াসহ ১৭টি দেশে কুচিয়া রপ্তানি করা হয়। বাণিজ্যিকভাবে কুচিয়া খামার করে এ দেশে প্রায় ১০ লাখ মানুষ এই পেশার সঙ্গে জড়িত। সরেজমিন দক্ষিণ আইচা এলাকায় কয়েকটি খামার পরিদর্শন করে দেখা যায়, চরফ্যাশনে হিন্দু সম্প্রদায়ের ১০ পরিবার আলাদা আলাদা ১০টি খামার তৈরি করে। ২০ ফুট দৈর্ঘ্য, ১০ ফুট প্রস্ত এবং সাড়ে ৩ ফুট উচ্চতায় খামারগুলোতে কুচিয়ার পোনা ছাড়া হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে বড় ধরনের কুচিয়ার চালান ঢাকা পাঠানো হবে বলে জানান চাষিরা। কুচিয়া চাষি কমল কুলু জানান, উপজেলার অনেক বেকার যুবক, কলেজ ছাত্র খামার তৈরির আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য ঠিক রেখে অধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে এখনই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কুচিয়া চাষের প্রচলন করা খুবই জরুরি। চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. মাহবুব কবির বলেন, কুচিয়া অনেক সু-স্বাদু খাবার। যা শরীরের রক্ত শূন্যতা, ডায়াবেটিস, বাত, অ্যাজমা ও ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে। কুচিয়া খেলে হৃদপি  সুরক্ষা হয় এবং স্টোক হওয়ার প্রবণতা ১৩ শতাংশ কমে যায়। চরফ্যাশন খাসমহল জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা রফিকুল ইসলাম বলেন, কুচিয়া খাওয়া ইসলামিক বিধানে সম্পূর্ণ হারাম। বাংলাদেশে প্রায় ৭৬ প্রজাতির মাছ রয়েছে। এ ধরনের প্রাণী মুসলমানদের জন্য কুচিয়া অখাদ্য। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মারুক হোসেন মিনার বলেন, যে কেউ কুচিয়া চাষাবাদে আগ্রহী হলে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। দুঃস্থ পরিবারগুলো স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি বেকারত্ব কমবে এবং আয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর