শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

পিবিআই তদন্তে পুলিশের অনীহা

চার্জশিট দাখিল ৩ সেপ্টেম্বর

বরগুনা প্রতিনিধি

পিবিআই তদন্তে পুলিশের অনীহা

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের সময় চতুর্থবারের মতো বাড়িয়ে ৩ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করেছে আদালত। গতকাল সকালে বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে প্রথমে  রিফাত ফরাজী, রিশান ফরাজীসহ ১৩ জনকে এবং পরে আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে কাঠগড়ায় ৩ নারী পুলিশ প্রহরায় হাজির করা হয়। আদালতে তদন্তকারী কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে বিচারক অভিযোগপত্র দাখিলের জন্য ৩ সেপ্টেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেন। এদিকে মামলার তদন্তে পুলিশের বিচ্যুতি প্রকাশিত হওয়ার আশঙ্কায় পিআইবির তদন্তে অনীহা জানাচ্ছে পুলিশ।

পুলিশের নজরদারিতে মিন্নির পরিবার : রিফাত শরীফ হত্যার পর থেকে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে নানা ধরনের প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এখনো প্রতিদিন মিন্নির বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের নজরদারিতে রাখছে সাদা পোশাকধারী পুলিশ। মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর অভিযোগ করেন, পুলিশ আমার পরিবারের সঙ্গে আসামির মতো আচরণ করছে। আমার সন্তানরা আতঙ্কে এখনো স্কুলে যেতে পারছে না। আমাকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখায় আমি স¦াভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছি না।

পুলিশের উদ্ধারকৃত ২৬ জুন রিফাত শরীফের ওপর হামলার ঘটনার সময় সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, সকাল ১০টা ১০ মিনিট থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। ১০টা ২৩ মিনিটে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ সুপারের নিকট রাত ১০টায় সাংবাদিকরা রিফাত শরীফ হত্যার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও  ডিআইওয়ানকে কীভাবে কী ঘটেছে তার নোট দিতে বলেন। পরবর্তীতে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। নয়ন বন্ডসহ এজাহারভুক্ত আসামিদের কখন কোথা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলেও তা গোপন রাখা হয়। রাব্বি আকন নামে এজাহারভুক্ত আসামিকে তার বাবা পুলিশের কাছে সোপর্দ করলেও পুলিশ তা গোপন রেখে পরে গ্রেফতার দেখায়। এ ছাড়া রিফাত ও রিশান ফরাজীকে গ্রেফতারের অনেক পরে গণমাধ্যমের সামনে আনা হয়। মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও আসামি শনাক্ত করার নামে বাড়ি থেকে নিয়ে পুলিশ লাইনে জিজ্ঞাসাবাদের ১২ ঘণ্টা পরে গ্রেফতার দেখানো হয়। মিন্নিকে গ্রেফতারের প্রতিক্রিয়া সামাল দিতে রিশানকে পরের দিন গ্রেফতার দেখানো একটি কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে।

রিফাত শরীফ হত্যা মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য মিন্নির বাবার দাবি পুলিশ গুরুত্ব না দেওয়ার কারণ হিসেবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পিবিআইর তদন্ত হলে পুলিশের ব্যর্থতার অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে। পুলিশ সুপারের ভূমিকা, হত্যা ঘটনায় অপর ইন্ধনদাতা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের স্ত্রী সামসুন্নাহার খুকির ভূমিকা স্পষ্ট হবে। এসব কারণেই পিআইবির তদন্তে পুলিশ রাজি নয়। পুলিশ সুপারের নির্দেশেই রিফাত শরীফ হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে সময় চান তদন্তকারী কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর