বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

গুজবে অস্থিরতা ও দরপতন বেড়েই চলেছে

কোনো উদ্যোগে সুফল পাচ্ছে না শেয়ারবাজার

আলী রিয়াজ

গুজবে অস্থিরতা ও দরপতন বেড়েই চলেছে

নানা গুজবে অস্থিরতা ও দরপতন চলছে শেয়ারবাজারে। এক দিন সূচক কিছুটা বাড়লে পরদিনই পড়ছে বড় পতনের মুখে। ঠেকানো যাচ্ছে না গুজব রটনাকারীদের কার্যকলাপ। ফলে চলতি সপ্তাহের প্রথম দিনে উত্থানের পর পরের দিন পতন হয় শেয়ারবাজারে। তৃতীয় দিন মঙ্গলবার সূচক কিছুটা বাড়লেও পরদিন গতকাল সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে ফের দরপতনে শেষ হয়েছে শেয়ারবাজারের লেনদেন। দেশের উভয় শেয়ারবাজারের সব সূচক কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ ও বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর। এদিকে বাজারজুড়ে নতুন গুজব ছড়িয়েছে সম্প্রতি তালিকাভুক্ত রিং সাইনের আইপিওর অর্থ পাচার নিয়ে। বাজারে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিতে এমন গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। জানা গেছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৪৮২ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে ৪৩৯ কোটি ৬১ লাখ টাকার। যা আগের দিনের চেয়ে ২৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা কম। চলতি সপ্তাহে চার কার্যদিবসে সূচক কমেছে দুই দিন ও দুই দিন বেড়েছে। ডিএসইতে দুই দিনে সূচক বেড়েছে ৩২ পয়েন্ট। বিপরীতে কমেছে ৬২ পয়েন্ট। ডিএসইতে ৩৫৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার মধ্যে ১১৪টির দর বেড়েছে এবং কমেছে ১৮০টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬১টির শেয়ার দর। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লাফার্জহোলসিমের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৭ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা বিবিএস ক্যাবলসের ১১ কোটি ৩১ লাখ এবং ৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে উঠে আসে এসকে ট্রিমস। লেনদেনে শীর্ষে থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, এডিএন টেলিকম, গ্রামীণফোন, ভিএফএস থ্রেড ডাইং ও স্কয়ার ফার্মা। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৬৬৯ পয়েন্টে। সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৪৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১০৩টির, কমেছে ১০৮টি ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৩২টির দর। এদিকে সপ্তাহজুড়ে সম্প্রতি তালিকাভুক্ত হওয়া রিং সাইনের আইপিও ফান্ড আত্মসাৎ নিয়ে শেয়ারবাজারে নানা ধরনের গুজব রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- কোম্পানির বিদেশি পরিচালকরা আইপিওর মাধ্যমে উত্তেলিত ১৫০ কোটি টাকার মধ্যে ৯০ কোটি টাকা নিয়ে বিদেশ চলে গেছেন। তারা আর দেশে ফিরবেন না। এমন খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রিং সাইন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কোম্পানিটিতে বিনিয়োগ রাখা, না রাখা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিনিয়োগকারীরা। তবে রিং সাইনের ব্যাংক বিবরণী থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটির আইপিও ফান্ডের জন্য ব্র্যাক ব্যাংকে চারটি হিসাব রয়েছে। এর মধ্যে আইপিওতে বাংলাদেশিদের আবেদনের জন্য একটি, বিদেশিদের মধ্যে ডলারের জন্য একটি, ইউরোর জন্য একটি এবং পাউন্ডের জন্য একটি হিসাব। এ বিষয়ে রিং সাইনের কোম্পানি সচিব আশরাফ আলী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রিং সাইন একটি বৃহৎ এবং হাজার কোটি টাকার টার্নওভারের কোম্পানি। একটি স্বার্থান্বেষী মহল বিদেশি পরিচালকরা আইপিও ফান্ড নিয়ে পালিয়ে গেছেন বলে গুজব ছড়িয়েছে। ওই মহলের অপপ্রচারের বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সচেতন হতে হবে। এ ছাড়া বিনিয়োগকারীরা সঠিক তথ্য জানার জন্য কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।

সর্বশেষ খবর