মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগে বিভক্তির কালোছায়া অতিক্রম করে এক যুগ পর ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয় এবং এতে গঠিত হয় নতুন জেলা কমিটি। ৭৫ সদস্যের এ কমিটিতে নেছার আহমদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান। কিন্তু এই নতুন কমিটির তালিকায় বাদ পড়েন দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা। যার ফলে ওই সময়ে সাংগঠনিক কার্যক্রমে ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মধ্যে কিছুটা ক্ষোভ দেখা দেয়। এর প্রভাব পড়ে মাঠের রাজনীতিতে। পরে শুরু হয়েছিল উপজেলাগুলোয় সম্মেলনের র্কযক্রম।। দীর্ঘদিন পরে উপজেলা কমিটিগুলোর কাউন্সিল শুরু হলে দেখা দেয় পুনরায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব। স্পষ্ট হয় আওয়ামী লীগে মেরুকরণ। ২ ডিসেম্বর, ২০১৯ মৌলভীবাজার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন চলাকালে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দুই গ্রুপের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ি, হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিভিন্ন কারণে সম্মেলনের দ্বিতীয় কাউন্সিল অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর ২৮ ডিসেম্বর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, আকবর আলীকে সভাপতি ও আবদুল মালিক তরফদার ভিপি সুয়েবকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি করা হয়েছে। তার পর থেকে আওয়ামী লীগের এক পক্ষের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা এ কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এমন দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিল রাজনগর উপজেলা কাউন্সিলের সময়ও।
বিএনপি : ২০০৯ সালে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির তিন পদে নেতাদের নাম ঘোষিত হয়েছিল। এম নাসের রহমানকে সভাপতি, খালেদা রব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক ও এম এ মুকিতকে যুগ্মসাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। সে সময় এই তিন নেতা মিলেই ছিল মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির কমিটি। ২০১৭ সালের ২৫ মে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক পত্রে এম নাসের রহমানকে সভাপতি ও মিজানুর রহমান মিজানকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ৪৮ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠনের জন্য ৩০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বাধীন দুটি ধারায় জেলা বিএনপির কার্যক্রম চলছিল। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিরোধের অবসান হয়। পরে প্রায় দুই বছরের মাথায় ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষিত হলেও জেলা বিএনপির তেমন কোনো কার্যক্রম মাঠে নেই। জেলার শীর্ষ নেতাদের স্থবির কার্যক্রমের কারণে মাঠ পর্যায়ের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে নীরবতা।