সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

নমুনা পরীক্ষার তলানিতে বাংলাদেশ

২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ১২৭৫, মৃত্যু ৩২

শামীম আহমেদ

নমুনা পরীক্ষার তলানিতে বাংলাদেশ

করোনা আক্রান্তে শীর্ষ ৩৫টি দেশের মধ্যে জনসংখ্যার ভিত্তিতে সর্বনিম্ন নমুনা পরীক্ষা হয়েছে বাংলাদেশে। এক লাখের ওপর রোগী শনাক্ত হয়েছে এমন দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন নমুনা পরীক্ষায় মিসরের পরই অবস্থান বাংলাদেশের। আর রোগী শনাক্তে শীর্ষ ১০০টি দেশের মধ্যে নমুনা পরীক্ষায় ৮৭টি দেশের পেছনে রয়েছে বাংলাদেশ। তবে রোগী শনাক্তে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫তম। ওয়ার্ল্ডোমিটারের গতকাল বিকাল ৫টার তথ্যানুযায়ী, এক লাখের ওপর করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে এমন দেশ বিশ্বে ৩৮টি। এর মধ্যে মিসরে রোগী শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৭৩৬ জন। দেশটিতে প্রতি ১০ লাখ জনসংখ্যার বিপরীতে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ হাজার ৩১৩টি, যা ৩৮টি দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। মিসরের পরই সর্বনিম্ন নমুনা পরীক্ষা হয়েছে বাংলাদেশে। এখানে প্রতি ১০ লাখে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১১ হাজার ৫৬৭টি। মোট রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ১৪৮ জন। সর্বনিম্ন নমুনা পরীক্ষায় তৃতীয় অবস্থানে থাকা ইন্দোনেশিয়ায় প্রতি ১০ লাখে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১১ হাজার ৬৯৬টি। রোগী শনাক্তে শীর্ষ ১০০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের চেয়ে কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে মিসর, নাইজেরিয়া, গিনি, মাদাগাস্কার, আফগানিস্তান, মিয়ানমার, ক্যামেরুন, আইভরিকোস্ট, জাম্বিয়া, কেনিয়া, সেনেগাল ও ইথিওপিয়ায়। এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১০ হাজার ৬৮৫টি নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ২৭৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। মৃত্যু হয়েছে আরও ৩২ জনের। জুনেও দেশে দৈনিক নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৮ হাজারের বেশি। বর্তমানে সংখ্যাটা ১০ থেকে ১৩ হাজারের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। সরকার সামনের শীতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করলেও রোগী খুঁজে বের করতে নমুনা পরীক্ষা বাড়ছে না, উল্টো কমছে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতেও নেওয়া হচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা। ঘরে-বাইরে মাস্কের ব্যবহার এখন নেই বললেই চলে। যানবাহন, হোটেল, রেস্তোরাঁ, হাট-বাজার কোথাও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। গতকালও বাংলাদেশে আগের দিনের চেয়ে ৮০টির কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১০ হাজার ৭৬৫টি। শনাক্তের হার ছিল ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ। একদিনের ব্যবধানে নমুনা পরীক্ষা কমেছে, কিন্তু বেড়েছে শনাক্তের হার। দেশে করোনা সংক্রমণের ৩৮তম সপ্তাহের তুলনায় ৩৯তম সপ্তাহে (২০ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর) নমুনা পরীক্ষা কমেছে ৫ দশমিক ৪২ শতাংশ, শনাক্ত কমেছে ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ, সুস্থতা কমেছে ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং মৃত্যু বেড়েছে ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে আরও ৩২ জনের। এ নিয়ে সরকারি হিসাবেই ভাইরাসটির কারণে দেশে মোট মারা গেলেন ৫ হাজার ১৬১ জন। এর বাইরে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হচ্ছে অনেকের। মৃত্যুর পরে তাদের কারও কারও নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হচ্ছে, কারও আবার পরীক্ষাই হচ্ছে না। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ হাজার ৭১৪ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হলেন ২ লাখ ৭০ হাজার ৪৯১ জন করোনা রোগী। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৫ দশমিক ৩১ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩২ জনের মধ্যে ২২ জন পুরুষ ও ১০ জন নারী। প্রত্যেকেরই মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। বয়স বিবেচনায় মৃত ৩২ জনের মধ্যে ২৩ জনই ষাটোর্ধ্ব। ৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে ২০ জন ঢাকা, ৫ জন চট্টগ্রাম, ৪ জন খুলনা, ২ জন সিলেট ও ১ জন রাজশাহী বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।  দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় এবং ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

সর্বশেষ খবর