শুক্রবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

সংঘাতের আশঙ্কা চট্টগ্রাম সিটিতে

নিয়ন্ত্রণে ‘নো মার্সি’ নীতি প্রশাসনের

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনের সংঘাত। প্রচারে বাধা, ক্যাম্প ভাঙচুর কিংবা হুমকি-ধমকিকে কেন্দ্র করে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে মেয়র কিংবা কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থক অনুসারীরা। ফলে চসিক নির্বাচনের উৎসব রূপ নিয়েছে আতঙ্কে। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনী সংঘাত থামাতে ‘নো মার্সি’ নীতি অনুসরণ করছে পুলিশ। চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে যতগুলো অভিযোগ জমা পড়ছে সবই গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত পাওয়া অভিযোগগুলোর মধ্যে কিছু ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে নির্বাচনী সংঘাতে জড়িত থাকার অভিযোগে।’

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (জনসংযোগ) শাহ মো. আবদুর রউফ বলেন, “নির্বাচনী সংঘাত নিয়ে ‘নো মার্সি’ ভূমিকা অবলম্বন করছে পুলিশ। সংঘাতে  যারাই জড়িয়ে পড়ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গত কয়েক দিনে যতগুলো নির্বাচনী সংঘাত হয়েছে, সবগুলো ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে আসামিও।’ চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে সূত্রে জানা যায়, দ্বিতীয় দফায় আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরু হওয়ার পর গত ১০ দিনে কমপক্ষে ৫০টি অভিযোগ জমা পড়েছে, যার অধিকাংশ হচ্ছে প্রার্থীদের অনুসারীদের মারধর, এলাকা ত্যাগের হুমকি, প্রচারণায় বাধা, প্রচারণার গাড়ি ভাঙচুর, প্রার্থীর ওপর হামলা, পোস্টার ছেঁড়া, হুমকি-ধমকি। বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন ও ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী জান্নাতুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থী নিরাপত্তা চেয়ে নির্বাচন কমিশনে লিখিত আবেদনও করেছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা করছে। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের গাড়ি ভাঙচুর করছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে পুলিশ। তাদের এলাকাছাড়া হতে বাধ্য করছে। অথচ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ হচ্ছে জনগণকে সুরক্ষা দেওয়া। কিন্তু তারা এ কাজ না করে বিএনপি প্রার্থীদের নির্বাচনী কাজে বাধা দিচ্ছে।’ বুধবার রাতে নগরীর আওয়ামী লীগের একটি নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে কাজীর দেউরী এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এর আগে বিকালে বাকলিয়া থানাধীন বলিরহাটে প্রচারণাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে পাঁচজন আহত হন। ১৮ জানুয়ারি নগরীর চশমা হিল এলাকায় বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ ওঠে। একই দিন সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুমকী তাকে হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগ করেন।

১৬ জানুয়ারি বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের গাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে। একই দিন নগরীর লালখান বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আবুল হাসনাত বেলাল এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। একই দিন ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এম আশরাফুল আলম তার কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ করেন। ১২ জানুয়ারি আগ্রাবাদের পাঠানটুলী ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থক ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আজগর আলী বাবুল নামে এক ব্যক্তি।

সর্বশেষ খবর