মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

কবর খুঁড়ে লাশ খাওয়ার অজুহাতে পিটিয়ে মারা হলো প্রাণীটিকে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

কবর খুঁড়ে লাশ খাওয়ার অজুহাতে পিটিয়ে মারা হলো প্রাণীটিকে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে কবর খুঁড়ে লাশ বের করার অজুহাতে বিরল প্রজাতির একটি প্রাণীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রবিবার সাবেক ইউপি সদস্য রহমত আলীর বাড়ির পাশে একটি পুকুরে স্থানীয়রা প্রাণীটিকে হত্যা করে। খবর পেয়ে অপরিচিত এই প্রাণীটিকে  দেখতে সকাল থেকে ইউপি সদস্যের বাড়িতে আশপাশের মানুষ ভিড় করছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গুনিয়াউক ইউনিয়নের চিতনা গ্রামে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, ভোরে রহমত আলীর বাড়ির আঙিনায় বন্য প্রাণী গন্ধগোকুলকে দেখে স্থানীয় লোকজন আদমখোর এসেছে, আদমখোর এসেছে বলে চিৎকার শুরু করে। কবর থেকে লাশ তুলে খায় এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে কয়েকশ মানুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে গন্ধগোকুলটিকে তাড়া করলে প্রাণ ভয়ে সেটি পানিতে পড়ে যায়। পরে  বিক্ষুব্ধ জনতা গন্ধগোকুলটিকে পিটিয়ে      মেরে একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। স্থানীয় চিকিৎসক খায়রুল ইসলাম বলেন, মানুষের অসচেতনতার কারণে বিলুপ্ত প্রায় এ প্রাণীটি মরতে হয়েছে। মানুষ ভেবেছিল এটি আদমখোর, যা মানুষের মৃত লাশ কবর থেকে তুলে খায়। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় জানায়, এটি একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী। এই প্রাণীটি ইন্ডিয়ান পাম সিভেট বা গন্ধগোকুল নামেই পরিচিত। এটি মাংসাশী প্রাণী না, ফলমূল ও পোকামাকড় খেয়ে বেঁচে থাকে।

এটি পাঁচ থেকে আট ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। স্থানীয়দের দাবি, কবরস্থানে নতুন লাশ দাফন করা হলে রাতের আঁধারে সেটি তুলে খেয়ে ফেলে প্রাণীটি। গত তিন মাসে পাঁচ থেকে ছয়টি লাশ কবর থেকে তুলে খেয়েছে এই প্রাণী। শনিবার হজরত আলী নামে এক ব্যক্তি মারা যান। তাকে দাফন করা হলে রবিবার সকালে এই প্রাণীটিকে কবরের মাটি খুঁড়তে দেখলে স্থানীয়রা সেটিকে পিটিয়ে হত্যা করে। নাসিরনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চন্দন কুমার পোদ্দার বলেন, এ প্রাণীটি কখনই মাংসাশী না। প্রাণীটা গন্ধগোকুল নামেই পরিচিত। এটি ফলমূল, ইঁদুর ও কীটপতঙ্গ খেয়ে বেঁচে থাকে। স্থানীয়রা হয়তো আতঙ্কিত হয়ে এবং ভুল ধারণা থেকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বিলুপ্ত প্রায় প্রাণীটিকে। প্রাণিসম্পদ বিভাগ যদি আগে থেকে খবর পেত তাহলে সেটিকে জীবিত উদ্ধার করত।

সর্বশেষ খবর