শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

পুণ্ডুরিয়া গ্রাম পাখির শান্তির নীড়

মাজেদ রহমান, জয়পুরহাট

পুণ্ডুরিয়া গ্রাম পাখির শান্তির নীড়

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার পুণ্ডুরিয়া গ্রামবাসীর ঘুম ভাঙে পাখির কিচিরমিচির ডাকে। রংবেরঙের বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কলোতানে সারা বছরই মুখর থাকে গ্রামটি। পাখিদের প্রতি গ্রামবাসীর ভালোবাসায় এরা খুঁজে পেয়েছে এক অভয়ারণ্য। যেন মায়ের কোলে সন্তানের শান্তির নীড়। পাখিদের লক্ষ্য করে একটি ঢিলও ছুড়তে পারে না কেউ। স্থানীয়দের মতে, ষাটের দশক থেকে পুণ্ডুরিয়া গ্রামের মৃত ফয়েজ উদ্দীন মন্ডলের পুকুর পাড়ের বিভিন্ন গাছে বাসা বাঁধতে থাকে দেশ-বিদেশের নানা প্রজাতির পাখি। দিনে দিনে এর পরিধি গ্রামের অনেক পুরনো গাছে ছড়িয়ে পড়ে। তবে শীতকালে পাখির সংখ্যা কিছুটা কমে যায়। বর্ষার পূর্ব থেকে দলে দলে আসতে থাকে পাখি। যে পাখিগুলো মাছ বেশি পছন্দ করে সেই পাখির সংখ্যা বেশি গ্রামটিতে। স্থানীয়ভাবে এই পাখিগুলোকে পানকৌড়ি, হারগিলা, রাতচোরা, শামুকখোল, বিভিন্ন প্রজাতির বক, ঘুঘু, টিয়াসহ অনেক পাখির সমারোহ গ্রামটিতে। প্রতিদিনই দূর-দূরন্ত থেকে পাখিপ্রেমীরা আসেন পাখি দেখতে। গ্রামবাসীরাও খুশি গ্রামে নতুন অতিথিদের আগমনে। বর্তমান এই পুকুরের মালিক আবদুর রশিদ জানান, তাঁর পুকুরকে লক্ষ্য করে যে পাখিদের অভয়ারণ্য গড়ে উঠেছে তাতে তিনি ভীষণ খুশি। তার পুকুর পাড়ে তেঁতুল, আম জামসহ নানা প্রজাতির গাছ রয়েছে। সেসব গাছে বাসা বেঁধে রয়েছে পাখিগুলো। তিনি আক্ষেপের স্বরে বলেন, এই পাখিগুলোর জন্য উন্নত ব্যবস্থা করা গেলে অতি শীতের মধ্যে পাখিগুলো অন্যত্র যেত না।  গ্রামটিতে পাখি দেখতে আসা আইনুল, বাঁধন জানালেন, গ্রামের রাস্তাঘাট একেবারে খারাপ। পাখি দেখতে এসে অনেক কষ্টে পড়তে হয়েছে আমাদের। স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুর রহমান শাহীন জানান, গ্রামে রাস্তাঘাট, আলোর কিছু সমস্যা রয়েছে। সরকারের সহযোগিতায় এসব সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। আক্কেলপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ওয়ালীউল ইসলাম জানান, বর্ষাকালে মূলত বেশি পাখির আনাগোনা থাকে। পাখিগুলো যাতে সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করা যায় এ ব্যাপারে গ্রামেই যুবক ছেলেদের নিয়ে দুটি টিম গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া তিনিও সার্বক্ষণিক নজর রাখেন এই পাখিগুলোকে সংরক্ষণের জন্য।

সর্বশেষ খবর