শুক্রবার, ১৮ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

যাত্রী হিসেবে গাড়িতে তুলে ছিনতাই করত তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘটনা গত ২০ মে রাত সাড়ে ৯টার। রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোডে বিআরটিসির কাউন্টারের সামনে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন আরিফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। তার মতো আরও কয়েকজন অপেক্ষা করছিলেন যার যার গন্তব্যে যাওয়ার জন্য। প্রাইভেট কারে নারায়ণগঞ্জের ভুলতায় যেতে গিয়ে ছিনতাইয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি।

কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় অপেক্ষার কিছু সময়ের মধ্যে একটি প্রাইভেট কার আসে। সামনে থেকে ছুটে যান কয়েকজন। তাদের পিছু পিছু যান আরিফুলও। একটি সিট পেয়ে প্রাইভেটকারে উঠে বসেন তিনি। তাকে মাঝখানে বসিয়ে গাড়ি ছেড়ে দেয়। কিছুদূর যেতেই দুই পাশ থেকে দুজন তাকে চেপে ধরে। ফোন, টাকা ও বিকাশের পিন নম্বর নিয়ে নেয়। সব লুটে নিয়ে চোখে স্প্রে করে গাজীপুরের কালীগঞ্জে রাস্তার পাশে ফেলে যায়।

বুধবার রাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থেকে এই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- চক্রের হোতা মানিক মিয়া ও তার সহযোগী জাকির হোসেন, আরিফ, হযরত আলী ও জাহিদ হোসেন। গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, ছিনতাইয়ের শিকার আরিফুল খিলক্ষেত থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ডিবি পুলিশের উত্তরা বিভাগ চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারের সময় ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি সাদা রঙের প্রাইভেট কার, একটি মোবাইল ফোন, লোহার বাঁটযুক্ত একটি ছুরি, একটি সবুজ রঙের পুরনো গামছা, একটি খাকি স্কচটেপ, লাল-কালো রঙের ইলেকট্রিক তার, কালো বাঁটযুক্ত একটি স্ক্রু ড্রাইভার, একটি লোহার তৈরি লিভার জব্দ করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ আক্তার বলেন, প্রাইভেটকারে ওঠার সময় আরিফুলের আশপাশে আরও কিছু লোক ছিলেন। তারাও বাসের জন্য অপেক্ষা করার অভিনয় করছিলেন। মূলত তারাও এই চক্রের সদস্য। হঠাৎ আসা একটি প্রাইভেটকারে অন্যদের সঙ্গে উঠতে গিয়ে ফাঁদে পড়েন তিনি।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছে, তারা খিলক্ষেত, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে ভুলতা-গাউছিয়া এবং এয়ারপোর্ট থেকে ময়মনসিংহ, শেরপুরে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে কৌশলে যাত্রী ওঠায়। পরে যাত্রীর গলায় ইলেকট্রিক তার পেঁচিয়ে, গামছা দিয়ে চোখ ও হাত বেঁধে, মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে, গলায় ছুরি ধরে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে সর্বস্ব লুট করে নেয়।

এরপর নির্জন স্থানে ফেলে দিয়ে চলে যায়। রাজধানীর সড়কগুলো সিসিটিভির আওতায় আনতে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলেও জানান হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, রাজধানীতে অনেক কনস্ট্রাকশনের কাজ চলছে। সেগুলোকে কেন্দ্র করে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। আগামী ১-২ বছরের মধ্যে শহরকে সিসিটিভির আওতায় আনাসহ তদন্তে অন্যান্য প্রযুক্তির সুবিধা যুক্ত হবে।

সর্বশেষ খবর