শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

সংযোগ সড়কের অভাবে কাজে আসছে না সেতু

ভোগান্তি ৩ লাখ মানুষের

সাজ্জাদ হোসেন, নড়াইল

সংযোগ সড়কের অভাবে কাজে আসছে না সেতু

নড়াইল সদর উপজেলার নড়াইল-ফুলতলা সড়কের গোবরা বাজারে চিত্রা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির উভয় পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ফলে নড়াইল, যশোর, খুলনাসহ আশপাশের জেলার কমপক্ষে ৩ লাখ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এলাকাবাসী এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহর থেকে সরাসরি স্বল্প সময়ে খুলনায় যাওয়ার পথে কলোড়া ইউনিয়ন ও সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র গোবরা বাজার-সংলগ্ন চিত্রা নদীর ওপর সেকালের একটি সরু সেতু থাকলেও সেটি ভারী যানবাহন ও যাত্রী পরিবহন এবং বাস চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে একটি যুগোপযোগী সেতু নির্মাণ ও  নড়াইল-ফুলতলা পর্যন্ত দুই লেনবিশিষ্ট সড়ক নির্মাণের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের মে মাসে নড়াইল-ফুলতলা সড়কের ২৭ কিলোমিটার দুই লেনবিশিষ্ট সড়ক, চিত্রা নদীর মোহনায় ৫০ দশমিক ১২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রশস্ত গোবরা সেতু, সংযোগ সড়ক এবং ১৯টি কালভার্টের কাজ শুরু হয়। ১১৭ কোটি ৮৮ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ব্যয়ে এর কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মো. মইনুদ্দীন বাঁশি জেভি ফার্ম। এ কাজ ২০২০ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শেষ না হওয়ায় চলতি বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের সময়কাল বাড়ানো হয়েছে। এ পর্যন্ত সেতুর কাজ অনেকটা সম্পন্ন হলেও সংযোগ সড়কের কাজ শুরুই হয়নি। ফলে সেতুটি ব্যবহার করতে পারছেন না চলাচলকারী লোকজন। নড়াইল সদর উপজেলার গোবরা সেতুটির নির্মাণকাজ এক বছরের অধিক সময় আগে শেষ হয়। তবে সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে সংযোগ সড়কের কাজ কিছুটা শুরু হলেও উত্তর প্রান্তে দৃশ্যমান কিছুই হয়নি। প্রকৃতপক্ষে সেতুর দুই প্রান্তে অর্ধশতাধিক জমির মালিক ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় সংযোগ সড়কের কাজ শুরু হচ্ছে না। ফলে এক বছরের কাজ প্রায় তিন বছরেও শেষ না হওয়ায় এর সুফল পাচ্ছেন না এলাকাবাসী।

গোবরা বাজারের ব্যবসায়ী পশুপতি বিশ্বাস বলেন, ‘সংযোগ সড়ক না হওয়ায় যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটেও সেতুতে ওঠা যায় না। সংযোগ সড়ক হলে নড়াইল শহর থেকে সরাসরি বিভাগীয় শহর খুলনাসহ সারা দেশে সহজেই যাতায়াত করা যাবে। খুলনা যেতে তিন ঘণ্টা সময়ের পথ কমে আসবে মাত্র ১ ঘণ্টায়। ফলে শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরিসহ বিভিন্নভাবে এ অঞ্চলের মানুষ উপকৃত হবেন।’

সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম হিটু বলেন,  ‘সংযোগ সড়কের অভাবে সেতুটির সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। সংযোগ সড়ক কিংবা বিকল্প সড়ক না থাকায় জনবহুল গোবরা বাজারের ভিতরের গলিপথ ব্যবহার করে ভারী যানবাহন চলাচল করায় প্রতিনিয়ত যানজটসহ বাড়ছে মারাত্মক ভোগান্তি। সেতুসহ সড়কটি চালু হলে নড়াইল ও আশপাশের জেলার কমপক্ষে ৩ লাখ মানুষ উপকৃত হবে।’ জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সেতুর দক্ষিণ অংশের সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। সেতুর দুই পাশের জায়গা বুঝে না পাওয়ায় সংযোগ সড়কের কাজ বিলম্ব হচ্ছে। আশা করি উভয় প্রান্তে সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ অচিরেই শেষ করা যাবে।’ এ প্রসঙ্গে নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘সেতুর দুই প্রান্তে ১ দশমিক ২ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের জন্য ৫ দশমিক ৯ একর জমি অধিগ্রহণে জটিলতার কারণে বিলম্ব হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের সঙ্গে সমাধান শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আশা করি আমরা শিগগিরই সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ পুরোদমে করতে পারব।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর