অল্প খরচে দ্রুত সময়ের মধ্যে চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানির কথা বলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ইকোম্যাক্স নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পণ্যের চালান প্রতি ৫০ শতাংশ টাকা আগে নিয়ে তা আত্মসাৎ করত চক্রটি।
মঙ্গলবার রাতে এই চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা হলেন- আরাফাত হোসাইন ও নাজিম উদ্দিন। পৃথক অভিযানে রাজধানীতে সবজি বিক্রেতার আড়ালে থাকা ডাকাত সরদারকে গ্রেফতার করেছে সংস্থাটি।
গতকাল বেলা ১১টায় রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান সিআইডির ঢাকা মেট্রোর অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন।তিনি বলেন, তিন সদস্যের এই প্রতারক চক্র ইকোম্যাক্স নামের একটি আমদানি-রপ্তানির ভুয়া প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। তারা যাত্রাবাড়ী এলাকায় অফিস ভাড়া করে দামি ফার্নিচার দিয়ে অফিস সাজিয়ে ব্যবসা করছিল। অল্প সময়ে কম খরচে চীন থেকে গ্রাহকের চাহিদা মতো পণ্য এনে দেওয়ার কথা বলে ৫০ ভাগ টাকা অগ্রিম নিত তারা। চট্টগ্রাম বন্দরে মালামাল পৌঁছে যাওয়ার কথা বলে আরও ২০ ভাগ টাকা নিত। চক্রটি মানুষের আস্থা অর্জনের জন্য চুক্তিপত্র করত। তাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া পণ্যের মধ্যে ছিল পোশাক কারখানার সরঞ্জাম, কম্পিউটার যন্ত্রাংশ, মেডিকেল সরঞ্জাম, বাইক, কাপড় সিলিকাজেল এবং লোগো ইত্যাদি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তাদের ভাড়া করা মার্কেটিং কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে যার যে ধরনের পণ্য দরকার, তা চীন থেকে আনার অফার দিতেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে সময়ক্ষেপণ করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে অফিস পরিবর্তন করে মোবাইল বন্ধ করে পালিয়ে যেতেন। চক্রের সদস্যরা এর আগে চীনে লেখাপড়া করেছেন। আরেক সদস্য চীন থেকে মেডিকেল যন্ত্রাংশ কেনার জন্য যাওয়া-আসা করতেন। চক্রের সদস্যরা এখন পর্যন্ত ৩৫ ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অন্যান্য ভুক্তভোগীদের কাছ থেকেও বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা গেছে। ইমাম হোসেন বলেন, গ্রেফতার আরাফাত হোসাইন পুরান ঢাকার ওয়ারীর ভজহরী স্ট্রিটের আহসান উল্লাহর ছেলে। তিনি ইকোম্যাক্স কার্গোর চেয়ারম্যান। আর নাজিম উদ্দিন পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার মুরাদপুর হাইস্কুল সড়কের ২৫ নম্বর বাড়ির আবদুল জব্বারের ছেলে।
তিনি ইকোম্যাক্স কার্গোর অর্থ পরিচালকের দায়িত্ব পালন করতেন। এক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী যাত্রাবাড়ী থানায় তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন।
একই স্থানে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানিয়েছেন, ঢাকা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, খুলনা, বরিশালসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে চাঞ্চল্যকর কয়েকটি ডাকাতির ঘটনার হোতা শহিদুল মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি ডাকাতি ও অস্ত্র আইনের আট মামলার আসামি। ডাকাতির কোনো ঘটনার আগে যেমন তিনি রেকি করেন, তেমনি এক জায়গায় ডাকাতি শেষে স্থান পরিবর্তন করে অবস্থান নেন অন্যত্র। নতুন স্থানে গিয়ে ফল বা সবজি বিক্রেতার ছদ্মবেশে এলাকা ও বাসা রেকি করে ডাকাতির পরিকল্পনা করতেন শহিদুল। মঙ্গলবার রাতে উত্তরা পশ্চিম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।