রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বড় গাছ কমে যাওয়ায় বেড়েছে মৃত্যু : ড. কবিরুল বাশার

নিজস্ব প্রতিবেদক

বড় গাছ কমে যাওয়ায় বেড়েছে মৃত্যু : ড. কবিরুল বাশার

স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্ট্রর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের (এসএসটিএএফ) প্রেসিডেন্ট ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেছেন, বজ্রপাত আগেও ছিল। এখনো আছে। বড় গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় বজ্রপাতে মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হচ্ছে কৃষকের। তারা মাঠে কাজ করতে গিয়ে বৃষ্টিতে ভেজেন। কাছাকাছি বড় গাছ না থাকায় বজ্রপাতে মারা যান। দেশের হাওর অঞ্চলগুলোতে বেশি বজ্রপাত হওয়ায় দ্রুত ওইসব অঞ্চলে আগাম বার্তা ও বজ্র নিরোধক টাওয়ার নির্মাণ করা প্রয়োজন। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু কমাতে সরকার তিনটি উদ্যোগ নিচ্ছে। একটি হলো- ‘আরলি ওয়ার্নিং সিস্টেম’, দ্বিতীয়টি হলো- ‘লাইটার অ্যারেস্টার’ সংবলিত বজ্রপাত-নিরোধক কংক্রিটের শেল্টার নির্মাণ এবং তৃতীয়টি হচ্ছে- জনসচেতনতা বৃদ্ধি। উদ্যোগগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন। পাশাপাশি দ্রুত বর্ধনশীল উঁচু জাতের বৃক্ষরোপণে জোর দেওয়া ও বড় গাছগুলো বাঁচিয়ে রাখা দরকার। বজ্র নিরোধক দণ্ড প্রতিটা বিল্ডিংয়ে লাগানোর বিষয়টি বিল্ডিং কোডে বাধ্যতামূলক করতে হবে। শিক্ষা কার্যক্রমে বজ্রপাত বিষয়ক সচেতনতা শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বজ্রপাতে আহতদের প্রাথমিক সেবা সংক্রান্ত বিষয়ে স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। কবিরুল বাশার বলেন, সব বজ্র ভূপৃষ্ঠে পড়ে না। শুধু ক্লাউড টু গ্রাউন্ড ডিসচার্জিংয়ের ফলে সৃষ্ট বজ্রই ভূপৃষ্ঠে পড়ে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়ের বজ্রপাতে মৃত্যুর পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বজ্রপাতের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকেন মাঠে কর্মরত কৃষকরা এবং জলাশয়ে মাছ ধরতে থাকা জেলে। এ ছাড়া বজ্র ঝড়ের সময়ে গাছ বা বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচে আশ্রয় নেওয়া লোকজন ও মাঠে খেলারত মানুষজনও ঝুঁকিতে থাকেন। অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আশরাফ দেওয়ানের গবেষণা মতে, প্রাক মৌসুমে অর্থাৎ মার্চ-এপ্রিল-মে মাসে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় হাওর এলাকায়। বিশেষ করে নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেটে। মৌসুমি সময়ে বেশি বজ্রপাত হয় সুনামগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, বরিশাল এবং উত্তরবঙ্গের রংপুর, পঞ্চগড় ও কুড়িগ্রামে। মৌসুম-উত্তর অর্থাৎ অক্টোবর-নভেম্বর মাসে পার্বত্য চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও কক্সবাজারে বজ্রপাত সবচেয়ে বেশি হয়। শীতকালে বেশি বজ্রপাত হয় সাতক্ষীরা, খুলনা, পটুয়াখালী এসব অঞ্চলে।

সর্বশেষ খবর